মোবাইলে ফোনে কতটুকু স্বর্ণ থাকে?

একটি স্মার্টফোন তৈরির জন্য বিভিন্ন পরিমাণে নানারকম ধাতু ব্যবহার করতে হয়। তার মধ্যে থাকে মূল্যবান স্বর্ণও। কিন্তু ঠিক কতটুকু স্বর্ণ থাকে একটি মোবাইল ফোনে? নষ্ট বা অচল মোবাইল থেকে স্বর্ণ বা অন্যান্য ধাতু কি আলাদা করে পুনর্ব্যবহার করা যায়? চলুন, জেনে নেওয়া যাক।

আপনার পকেটে থাকা মোবাইলটি বেশ কিছু ধাতু ও মূল্যবান উপাদানের ভান্ডার। মোবাইলের বাইরের অংশে থাকে অ্যালুমিনিয়াম। ডিসপ্লেতে ব্যবহার করা হয় ইন্ডিয়াম ও টার্বিয়াম ধাতু। অতিচৌম্বকীয় নিওডিমিয়াম ধাতু ব্যবহৃত হয় স্পিকারে। এ ছাড়া ক্যামেরায় ব্যবহার করা হয় ধাতব ল্যান্থানাম। ব্যাটারিতে থাকে লিথিয়াম, কোবাল্ট ও নিকেলের মতো ধাতু। তবে বৈদ্যুতিক সংযোগের জন্য তামা, সোনা, রূপা ও টাংস্টেনও ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া মাইক্রোচিপগুলোতে ব্যবহার করা হয় সিলিকন ও বিরল হাফনিয়াম ধাতু।

একটি স্মার্টফোনে গড়ে ৬০টি ধাতু ও উপধাতু ব্যবহার করা হয়। সোনা, রূপা, প্লাটিনাম এবং প্যালাডিয়ামের মতো মূল্যবান ধাতু তুলনামূলক কম ব্যবহার করা হয় স্মার্টফোনে। একটি স্মার্টফোনে সাধারণত ০.০৩ গ্রাম স্বর্ণ থাকে।

অচল মোবাইল ফোনের ধাতুগুলো সাধারণত পুনর্ব্যব্যবহারের জন্য আলাদা করা হয় না। কিন্তু মোবাইল কোম্পানিগুলোর উচিত পুরোনো স্মার্টফোন থেকে স্বর্ণ পুনর্ব্যবহারের চেষ্টা করা। এ কথা কেন বলছি? কারণ অন্যান্য ধাতুর সঙ্গে তুলনা করলে সোনার অপ্রতুলতা বোঝা যায়। তা ছাড়া, আমরা যে হারে লিথিয়াম ও কোবাল্ট ব্যবহার করছি, এভাবে চলতে থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার খনি থেকে উৎপাদিত ধাতু বিশ্বের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাবে।

এ কারণে মোবাইল ফোন ও অন্যান্য ডিভাইস থেকে ধাতু পুনর্ব্যবহারের চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সমস্যা হলো, এ ধরনের ডিভাইস থেকে ধাতু আলাদা করার পদ্ধতি এখনো অনুন্নত। তা ছাড়া এ কাজে বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করতে হয়। ভবিষ্যতে হয়তো বিজ্ঞানীরা ধাতু পুনর্ব্যবহারের কোনো উপযুক্ত পদ্ধতি উদ্ভাবিত করবেন। যদি আসলেই তা করা যায়, নিঃসন্দেহে সেটি হবে মানবজাতির জন্য আশীর্বাদ।

লেখক: সম্পাদনা দলের সদস্য, বিজ্ঞানচিন্তা  

সূত্র: সায়েন্স ইলাস্ট্রেটর