বিমান বানিয়ে এশিয়ায় চতুর্থ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা

এই বিমান নিয়েই নভোনীল দলের সদস্যরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেন

এমআইএসটির নভোনীল নামে একটি দল আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব অ্যারোনটিকস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিকস আয়োজিত ‘ডিজাইন, বিল্ড, ফ্লাই’ প্রতিযোগিতায় দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় হয়েছে। গোটা এশিয়ার মধ্যে হয়েছে চতুর্থ। আর সার্বিকভাবে ৭১তম হয়েছে তারা। ঢাকার মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) এই দলটি নিজেরা বিমান তৈরি করেছে। এই প্রতিযোগিতায় বিমানের নকশা, নির্মাণ এবং উড্ডয়ন সক্ষমতা—এই তিনটি বিষয়ে দলগুলোকে মূল্যায়ন করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস রাজ্যের উইচিটা শহরে অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের ২৮তম আসর। ১৮ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত চলে প্রতিযোগিতা। এতে বিশ্বের মোট ১১০টি দল অংশ নেয়। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৩টি দেশের প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিল।

এই প্রতিযোগিতা বিশ্বের অন্যতম কঠিন বিমান প্রতিযোগিতা হিসেবে পরিচিত। বিশ্বের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, যেমন ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি), ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের মতো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। 

এরকম একটি কঠিন প্রতিযোগিতায় নভোনীল দল তাদের নির্মিত বিমান ‘আকাশতরি’-এর মাধ্যমে বিচারকদের মন জয় করে নেয়। আকাশতরির নকশা, নির্মাণ ও উড্ডয়ন সক্ষমতা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ দলের সবাই মিলিটারি ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিমান প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী। নভোনীল দলের ৭ সদস্য হলেন নাভিদ ইবনে নেওয়াজ চৌধুরী, নাফিজ রেদোয়ান, শাহ ইশরাক, মাশরুর নাফিম, মাশহুনুর রহমান, কাজি তাউহিদ হোসেন ও স্বপ্নীল এন্দ।

নভোনীলের এই সাফল্য শুধু তাদের জন্যই নয়, গোটা বাংলাদেশের জন্যই গর্বের। শুরুতে অবশ্য ‘নভোনীল’ দলের সদস্যদের তহবিল সংগ্রহের জন্য অনেক বেগ পেতে হয়। তবে স্বল্প খরচে ব্যতিক্রমী এমন একটি মডেলের বিমান বানাতে পেরে দলের প্রত্যেকেই বেশ উচ্ছ্বসিত। দলের এক সদস্য এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের আসলে ফান্ডিংটা খুব দরকার। সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভালো পরিমাণ অর্থ পেলে আরও ভালো কিছু করা সম্ভব।’

আকাশে উড়ে বেড়ানোর স্বপ্ন কার না থাকে? ছোটবেলা থেকেই অনেকে বিমান তৈরির স্বপ্ন দেখেন। অনেকে বৈমানিক হতে চান। কিন্তু সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার মতো সাহসী হতে পারে কতজন? এমনই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের এ অর্জন প্রমাণ করে, বাংলাদেশের তরুণরা যদি সুযোগ পান, তাহলে তাঁরা বিশ্বের যেকোনো ক্ষেত্রে সফল হতে পারেন।

সূত্র: প্রথম আলো