রেফ্রিজারেটরে খাবার ঠান্ডা থাকে কীভাবে

রেফ্রিজারেটরের ভেতরের অংশছবি: সংগৃহীত

গৃহস্থালি সরঞ্জামাদির মধ্যে অন্যতম প্রয়োজনীয় যন্ত্র রেফ্রিজারেটর। কীভাবে এটি খাবার ঠান্ডা ও সতেজ রাখে?

ভেতরটা শীতল রাখতে ফ্রিজার সাধারণ বাষ্পীভবন প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে। অবিরাম এ চক্রে রেফ্রিজারেন্টকে তাপ শোষণ করিয়ে অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো হয়। রেফ্রিজারেন্ট যখন বাষ্পীয় অবস্থায় থাকে, তখন এ চক্র শুরু হয়। এটাকে তখন অভ্যন্তরীণ কম্প্রেসরে নিয়ে চাপ প্রয়োগ করা হয়। ফলে এ সময় ফ্রিজের বাইরে কনডেনসারে যাওয়ার আগেই রেফ্রিজারেন্টের তাপমাত্রা বেড়ে যায়।

কনডেনসারে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে রেফ্রিজারেন্ট উচ্চচাপের তরল অবস্থায় পরিণত হয়।

এই তরলকে এখন এক্সপানশন ভালভের মধ্য দিয়ে নিয়ে নিম্নচাপের ফ্রিজিং কম্পার্টমেন্টে প্রবেশ করানো হয়, যাতে রেফ্রিজারেন্ট ফুটতে শুরু করে। ফলে কম্পার্টমেন্টের তাপমাত্রা কমে যায়।

নিম্নচাপের রেফ্রিজারেন্ট বাষ্প কম্প্রেসরে প্রবেশ করলে পুরো চক্র আবার শুরু হয়।

এক্সপানশন ভালভ

কনডেনসার হয়ে ঘনীভূত তরল রেফ্রিজারেন্ট এক্সপানশন ভালভে প্রবেশ করে বাষ্প হয়ে প্রসারিত হওয়ার জন্য জায়গা পেয়ে যায়। প্রসারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা আরও কমে যায়। এখান থেকে নিম্নচাপের ফ্রিজিং প্রকোষ্ঠে (কম্পার্টমেন্ট) প্রবেশ করে। এ সময় তরল ফুটতে শুরু করে।

কম্পার্টমেন্ট (প্রকোষ্ঠ)

রেফ্রিজারেন্ট নিম্ন স্ফুটনাংকবিশিষ্ট বলে ফুটতে থাকে এবং বাষ্পে পরিণত হয়। কারণ, খাবারের মধ্যে জমে থাকা তাপ নিয়ে রেফ্রিজারেন্ট বাষ্প হয়ে যায়। এ সময় ফ্রিজের প্রধান চেম্বার ঠান্ডা হতে থাকে। পুনরায় এই গ্যাস কম্প্রেসরে প্রবেশ করে এবং এভাবেই চক্র চলতে থাকে।

কনডেনসার

গরম এবং উচ্চচাপের গ্যাস কনডেনসারে প্রবেশ করে ঠান্ডা ও উচ্চচাপের তরলে পরিণত হয়। বর্জিত তাপ কনডেনসারের মাধ্যমে পরিবেশে চলে যায় বলে ফ্রিজারের পেছন ভাগ সবসময় গরম থাকে।

বাষ্প

শীতলীকরণ চক্রের প্রথমে রেফ্রিজারেন্ট বাষ্পীয় অবস্থায় থাকে।

কম্প্রেসর

একটি অভ্যন্তরীণ কম্প্রেসর বাষ্পের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। এই কাজ করতে গিয়ে কম্প্রেসর অনেক উত্তপ্ত হয়ে যায়।

রেফ্রিজারেন্ট

একধরনের রাসায়নিক পদার্থ, যা এই সম্পূর্ণ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। আগে এই রাসায়নিক পদার্থ হিসেবে ব্যবহূত হতো ক্লোরোফ্লুরো কার্বন। কিন্তু সেটা ওজোন স্তরের জন্য ক্ষতিকর বলে বর্তমানে ব্যবহার করা হয় না। এখন জ-১৩৪ধ (টেট্রাফ্লুরোইথেন), হাইড্রোক্লোরোফ্লুরো কার্বন (ঐঈঋঈং) অথবা হাইড্রোফ্লুরো কার্বন (ঐঋঈং) ইত্যাদি রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়।

সূত্র: হাউ ইট ওয়ার্কস

*লেখাটি ২০১৭ সালে বিজ্ঞানচিন্তার এপ্রিল সংখ্যায় প্রকাশিত