ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির অ্যাস্ট্রোফিজিকস সেন্টারের পরিচালক হলেন আরিফ আহমেদ

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অ্যাস্ট্রোফিজিকস সেন্টারের পরিচালকের দায়িত্ব পেলেন অধ্যাপক আরিফ আহমেদ। গত ২৬ এপ্রিল, শুক্রবার তাঁকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির এমসিটি (মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি) বিভাগের অধ্যাপক। অ্যাস্ট্রোফিজিকস সেন্টার উদ্বোধনের সময়েই বলা হয়, এই অ্যাস্ট্রোফিজিকস সেন্টার চালু করার পেছনে অধ্যাপক আরিফ আহমেদের ভূমিকা অপরিসীম। তাঁর ভাবনা থেকেই এ সেন্টার চালু করার উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, এটিই দেশের প্রথম অ্যাস্ট্রোফিজিকস সেন্টার। গত ২৮ নভেম্বর সাভারের আশুলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এই সেন্টার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম লুত্ফর রহমান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন বিভাগের ডিন ও অধ্যাপকরা উপস্থিত ছিলেন। এই অ্যাস্ট্রোফিজিকস সেন্টারটি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির এমসিটি (মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি) বিভাগের তত্ত্বাবধানে।

অ্যাস্ট্রোফিজিকস সেন্টারের পরিচালক আরিফ আহমেদ

ইতিমধ্যে এই অ্যাস্ট্রোফিজিকস সেন্টারে একটি ১০ ইঞ্চি অ্যাপারচার টেলিস্কোপ বসানো হয়েছে। টেলিস্কোপটি আনা হয়েছে ভারতের দিল্লি থেকে। এর সাহায্যে শিক্ষার্থীরা রাতের আকাশে নক্ষত্র, গ্রহ, উপগ্রহ এবং গ্যালাক্সি দেখার সুযোগ পাবেন। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এ ধরনের উদ্যোগ এমনিতেই খুব বেশি নয়। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টি সাভারের আশুলিয়ায় অবস্থিত হওয়ায় সেখান আলোক দূষণ খুব কম। সব মিলে এটি শিক্ষার্থী ও আকাশ পর্যবেক্ষণে আগ্রহীদের জন্য সহায়ক হবে বলে জানায় ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়।

এরকম একটি উদ্যোগ নেওয়ার পেছনের গল্প শুনতে চাইলে আরিফ আহমেদ বিজ্ঞানচিন্তাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা মহাকাশবিজ্ঞান নিয়ে খুব আগ্রহী। এটা যাচাই করতে আমরা একটা জরিপ চালিয়েছিলাম আনুষ্ঠানিকভাবে। জানতে চেয়েছিলাম, মহাকাশবিজ্ঞান নিয়ে অনার্স করার সুযোগ থাকলে শিক্ষার্থীরা সেখানে পড়বেন কি না। প্রায় ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী সেখানে পড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অর্থাৎ কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম একটা বিভাগ থাকলে কিন্তু অনেকে পড়ত। তবে সেটা তো চট করে করা যাবে না। তাই আমরা শুরুটা করেছি আউটরিচ থেকে।’

ডিআইইউ অ্যাস্ট্রোফিজিকস সেন্টারের সামনে রম্যলেখক ও উন্মাদ-সম্পাদক আহসান হাবীব এবং অ্যাস্ট্রোফিজিকস সেন্টারের পরিচালক আরিফ আহমেদ

আউটরিচ, অর্থাৎ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে বিজ্ঞানে আগ্রহী করে তোলার লক্ষ্যেই এই অ্যাস্ট্রোফিজিকস সেন্টার বানানো হয়। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মতো প্রতিষ্ঠানও মানুষকে বিজ্ঞানে আগ্রহী করে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। কারণ, এই সচেতনতার মাধ্যমেই কিশোর-তরুণরা বিজ্ঞানে আগ্রহী হয়ে ওঠে। তাদের মধ্য থেকেই অনেকে বিজ্ঞানী হন, গবেষণা করেন। আরিফ আহমেদের পরিকল্পনাও অনেকটা সেরকম। তিনি জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব সায়েন্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজির অধীনে পরবর্তীতে জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান বিভাগ খোলার পরিকল্পনা রয়েছে আমার।’

এরকম পরিকল্পনার পেছনে রয়েছে এককালে তাঁর নিজের জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান নিয়ে পড়ার আগ্রহ। তিনি বলেন, ‘আমি পড়তে চেয়েছিলাম অ্যাস্ট্রোফিজিকসে। তখন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম কোনো বিভাগ ছিল না, পড়াশোনার সুযোগ ছিল না। তাই আমি অ্যাপ্লায়েড ফিজিকস অ্যান্ড ইলেকট্রনিকসে পড়াশোনা করি। এতদিন পর, এখনো দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম কোনো বিভাগ নেই। আমি চাই, আমি যে সুযোগ পাইনি, এখনকার শিক্ষার্থীরা যেন সে সুযোগ পায়।’

অ্যাস্ট্রোফিজিকস সেন্টার উদ্বোধনের পাশাপাশি দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং বা এমওইউ, অর্থাৎ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে ইতিমধ্যেই। এর একটি হলো মহাবৃত্ত। বিজ্ঞানবক্তা আসিফ এই ত্রৈমাসিক পত্রিকাটির সম্পাদক। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ডিসকাশন প্রজেক্ট-এর সহযোগী প্রকাশনা এটি। অন্যটি মিকবি সায়েন্টিফিক (MicB Scientific)। টেলিস্কোপসহ বৈজ্ঞানিক নানা ধরনের যন্ত্র বিক্রি করে এই প্রতিষ্ঠানটি।