মহাকাশপ্রেমীদের জন্য রাতের আকাশ অসম্ভব সুন্দর। তবু রাতের আকাশের অসাধারণ ছবির পেছনে ফটোগ্রাফারদের কারিকুরি থাকে। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি, পরিকল্পনা এবং সৃজনশীলতাই ছবিটি করে তোলে জীবন্ত।
ভ্রমণ ফটোগ্রাফি সাইট ‘ক্যাপচার দ্য অ্যাটলাস মিল্কিওয়ে ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার ২০২৪’-এর ছবি প্রকাশ করেছে। এ প্রতিযোগিতার সপ্তম সংস্করণে বিশ্বজুড়ে ফটোগ্রাফারদের তোলা মিল্কিওয়ের অসাধারণ কিছু ছবি বিজ্ঞানচিন্তার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
ইতালীয় ফটোগ্রাফার লরেঞ্জো রানিয়েরি এই অসাধারণ ছবিটি চিলির আতাকামা মরুভূমির একটি পর্বতের সামনের অংশ। এলাকাটি সিংহের আবাসস্থলের জন্য সংরক্ষিত। ছবির কেন্দ্রে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি দেখা যাচ্ছে স্পষ্ট। গ্যালাক্সিটির নক্ষত্র ও গ্যাসের মেঘে পূর্ণ।
ফ্রান্সের ফটোগ্রাফার জুলিয়েন লুটেন একটা মধ্যযুগীয় দুর্গের পাদদেশ থেকে এই অসাধারণ দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি করেছেন। গত বছর তিনি একটা ব্যতিক্রমী দৃশ্যের সাক্ষী হন। অনেক রঙের মেঘে আলোকিত হয়ে ওঠে আকাশ। সেই ছবি ক্যামেরা বন্দি করেন জুলিয়েন। বায়ুমণ্ডলের ওপরের অংশে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে এরকম ক্ষীণ আলো নির্গত হয়, যা কেমিলুমিনেসেন্স নামে পরিচিত।
নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ পর্বত মাউন্ট কুক থেকে এই ছবিটি তুলেছেন দেশটির ফটোগ্রাফার টম রে। হ্রদের কাছে গিয়ে তিনি এই অসাধারণ দৃশ্যে দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তা ক্যামেরাবন্দি করতে ভোলেননি।
ওমানের জাবালে শামস পার্বত্য এলাকার একটি প্রাচীন জুনিপার গাছের ছবি ও মিল্কিওয়ের ছবি একই ফ্রেমে তুলেছেন ফটোগ্রাফার বেঞ্জামিন বারাকাত। তাঁর বিশ্বাস, গাছটি জ্ঞান ও স্থিতিশীলতার প্রতীক।
অস্ট্রেলিয়ার রেনবো ভ্যালি থেকে রংধনুর এ ছবি তুলেছেন ফটোগ্রাফার বেলি ফার্লে। এলাকাটি বেশিরভাগ সময় অন্ধকার থাকে। আশপাশে জনমানুষের চিহ্ন নেই। ফলে এমন অন্ধকার জায়গা মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি দেখার জন্য আদর্শ। ছবিতে স্পষ্ট মিল্কিওয়ে দেখা যাচ্ছে।
ইতালির গিয়াউ পাস নামে বেলুনো প্রদেশের একটি উচ্চ পর্বতের গিরিপথ থেকে ছবিটি তুলেছেন আন্দ্রেয়া কার্জি। এ প্রায় দশটি আলাদা আলাদা ছবি এক করে এই মূল ছবি তৈরি করা হয়েছে।
ছবিটি তোলা হয়েছে দক্ষিণ জর্ডানের এক বেদুইন উপজাতির আবাসস্থল থেকে। ছবিটি তুলেছেন মিহাইল মিনকভ। তিনি বলেন, ‘ছবিটি মহাকাশের বিশালতা ও মানবসভ্যতার ক্ষুদ্র প্রকৃতির মধ্যে বিশাল বৈসাদৃশ্য তুলে ধরেছে।’
মিল্কিওয়ের এই ছবিটি তোলা হয়েছে নিউজিল্যান্ডের আওরাকি ন্যাশনাল পার্কের একটি উপত্যকা থেকে। তুলেছেন কেভেন চে। মানসিক শান্তির জন্য তিনি প্রায়ই পাহাড়ে ক্যাম্প করে থাকেন। মিল্কিওয়ের এই বিশালতাই নাকি তাঁকে কষ্ট করে পাহাড়ে ওঠার অনুপ্রেরণা দেয় বারবার।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউটা মরুভূমির গবলিন ভ্যালি স্টেট পার্ক প্রকৃতির এক অসাধারণ উপহার। ‘থ্রি সিস্টার’ নামে পরিচিত এই হুডু এক ধরনের মরুভূমির শিলা। ছবিটি তুলেছেন ফটোগ্রাফার মার্সিন জাজ্যাক।
আর্জেন্টিনার পাতাগোনিয়া মরুভূমিতে অবস্থিত প্রকৃতির এই অসাধারণ সৌন্দর্যের নিদর্শন। এই অসাধারণ দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করেছেন ফটোগ্রাফার ফ্রান্সেসকো ডাল’ওলমো। স্থানীয় সময় সকাল ৭টার দিকে ছবিটি তোলেন তিনি।