চাঁদে কী আছে

ছোটদের জন্য সহজ ভাষায় লেখা কঠিন। সহজ কথা যে যায় না বলা সহজে! অথচ একদম সহজ-সাবলীল ভাষায় লেখা এই বই। টেলিস্কোপ কী বলে নামের এ বই সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের রাদুগা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালে। পাভেল ক্লুশান্‌ৎসেভের লেখা বইটি রুশ থেকে অনুবাদ করেছেন অরুণ সোম। এ বইয়ে প্রচুর ছবি আছে। সেগুলো এঁকেছেন ইয়ে. ভোইশ্‌ভিল্লো, ব. কালাউশিন, ব.স্তারোদুব্‌ৎসেভ এবং ইউ. কিসিলিওভ। বিজ্ঞানচিন্তার পাঠকদের জন্য ধারাবাহিকভাবে বইটি প্রকাশিত হচ্ছে…

শশী হলো নৈশ রূপকথার রানী। তাকে নিয়ে লোকে অনেক রূপকথা রচনা করেছে। সোভিয়েত দেশের দক্ষিণে কিরগিজিয়ায় চাঁদ সম্পর্কে লোকে এই রকম একটা রূপকথা রচনা করেছে।

এখন আমরা জানি যে চাঁদ একটা প্রকাণ্ড পাথরের গোলা। সে সগৌরবে মহাকাশে ভাসতে ভাসতে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে।

আচ্ছা, আগেকার দিনে যখন টেলিস্কোপ ছিল না তখন লোকে কী করত? তারা স্রেফ চাঁদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখত, আরও ভালো করে তাকে নিরীক্ষণ করার চেষ্টা করত আর ভাবত, কেবলই ভাবত। আন্দাজে বোঝার চেষ্টা করত চাঁদটা কী।

চাঁদের নীল-নীল রূপালি আলোয় সব কিছু যেন রহস্যময়, হেঁয়ালিপূর্ণ। গাছপালা স্থির। পানির গায়ে ঝলমল করছে আলোর রেখা। নিস্তব্ধতা।

শশী হলো নৈশ রূপকথার রানী। তাকে নিয়ে লোকে অনেক রূপকথা রচনা করেছে। সোভিয়েত দেশের দক্ষিণে কিরগিজিয়ায় চাঁদ সম্পর্কে লোকে এই রকম একটা রূপকথা রচনা করেছে। কোনো এক সময় চাঁদ নামে এক ধনী খান ছিল। তার ছিল শশী নামে এক সুন্দরী মেয়ে। সাগরপারের বহু মহাবীর সুন্দরী শশীর মন জয় করতে চাইল, তার পাণিপ্রার্থনা করল, তাকে বধূ করতে চাইল। কিন্তু সবাইকে তাড়িয়ে দিল খানের মেয়ে, কেননা সে ভালোবাসত এক গরীব নাবিককে, এক জাহাজীকে। জাহাজীও তাকে ভালোবাসত।

কিন্তু সম্ভ্রান্তবংশের খান মরে গেলেও তার মেয়েকে এক অজ্ঞাতকুলশীল জাহাজীর সঙ্গে বিয়ে দেবে না। তখন যুবক ঠিক করল দূর দেশে যাত্রা করবে, বড় বড় কীর্তি সাধন করে নামজাদা বীর হয়ে ফিরে আসবে। তাহলে খানের আর সাধ্যি হবে না তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার। জাহাজী তার ভাবী বধূর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দূর দেশের উদ্দেশে সমুদ্রযাত্রায় নামল। এদিকে সুন্দরী শশী তার জন্যে দিন গুনতে লাগল।

চাঁদের পৃষ্ঠে আছে অনেক গর্ত

বহুকাল কেটে গেল, মনের মানুষটির কোনো খোঁজখবর নেই। শশী অস্থির হয়ে পড়ল, রোজ রাতে সাগরতীরে বেরিয়ে এসে দেখে জাহাজী আসছে কি না। কিন্তু না, সে আর আসে না। কিছু ঘটল কি না কে জানে? শশী কাঁদে, তার মন বিষাদে ভরে ওঠে।

বৃদ্ধ খান মারা গেল। জমকাল প্রাসাদে এখন রইল একা তার কন্যাটি। রোজ রাতে সে তার বিয়ের সাজ পরে একটা মায়াতরীতে চেপে সখী তারকাদের সঙ্গে ধীরে ধীরে আকাশপথে চলে বেড়ায়। ব্যথাতুর দৃষ্টিতে দূরের পানে তাকিয়ে দেখে, হারানো দয়িতের সন্ধান করে।

প্রথম প্রথম স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রগুলো ছিল অনড়। চাঁদের যেখানে গিয়ে নামল সেখানেই বসে থাকত। কেবল ‘মাথাটা’ ঘোরাত। পরে বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়াররা আরও বেশি ‘বুদ্ধিমান’ যন্ত্রপাতি চাঁদে পাঠাতে লাগলেন।

এই কারণে চাঁদ এমন ফ্যাকাশে আর বিষণ্ণ। আরেক প্রাচীন রূপকথায় চাঁদ হলো এক রূপালি মায়াদ্বীপ—নীল আকাশ-সাগরে ভাসছে। এই দ্বীপে বিচিত্র অধিবাসীদের বাস, তারা দেখতে মানুষের মতো নয়।

কিন্তু বেশিরভাগ রূপকথাতেই চাঁদ হলো এক জীবন্ত প্রাণী। আর সত্যিই তো, চাঁদের দিকে যখন তাকাও তখন মনে হয় যেন তার প্রসন্ন মুখটা তোমার দিকে চেয়ে আছে। চাঁদের বুকে যে কলঙ্কগুলো আছে সেগুলোর সঙ্গে কিন্তু চোখ-নাক- মুখের বড় মিল!

রূপকথায় চাঁদ সব সময় ভালো, উদার, মাঝেমধ্যে বিষন্ন। টেলিস্কোপের সাহায্যে লোকে চাঁদ ভালোমতো নিরীক্ষণ করতে পারল। কিন্তু মানুষের ইচ্ছে হলো আরও বেশি করে তার সমস্ত খুঁটিনাটি, আকর্ষণীয় সব কিছু দেখে। রকেটের সাহায্যে মানুষ তাই সরাসরি ওখানে, একেবারে চাঁদে পাঠাতে শুরু করল নানা রকম স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি। যন্ত্রগুলো তাদের কাচের চোখ দিয়ে চারপাশের সমস্ত কিছু নিরীক্ষণ করে, নিজের আশেপাশে যা যা দেখে টেলিভিশনের সাহায্যে তা আমাদের দেখাতে থাকে।

রুপকথার চাঁদ

প্রথম প্রথম স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রগুলো ছিল অনড়। চাঁদের যেখানে গিয়ে নামল সেখানেই বসে থাকত। কেবল ‘মাথাটা’ ঘোরাত। পরে বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়াররা আরও বেশি ‘বুদ্ধিমান’ যন্ত্রপাতি চাঁদে পাঠাতে লাগলেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের এই ধরনের স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মধ্যে এমন কিছু কিছু ছিল, যেগুলো চাঁদে নামার পর লম্বা লোহার হাত বাড়িয়ে দিয়ে এক ডেলা চন্দ্রমৃত্তিকা তুলে নিয়ে সঙ্গের ছোট রকেটের ভেতরে পুরে ফেলে এবং তা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসে। এভাবে বিজ্ঞানীরা, সোজা ভাষায় বলা যেতে পারে, ‘বাড়ি থেকে না বেরিয়েই’ ‘চাঁদের কণা’ হাতে পেয়ে গেলেন। চাকা ও ইঞ্জিন লাগানো কিছু চন্দ্র-অভিযানকারী স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রও আমাদের ছিল। এ রকম চন্দ্রযান ‘লুনোখোদ’ এলাকা পরিদর্শন করে নিজের চারপাশে যা যা দেখতে পায় টেলিভিশন মারফত সে সব জিনিসের ছবি পৃথিবীর মানুষকে পাঠায়। মানুষ পৃথিবী থেকে রেডিওর সাহায্যে এই চন্দ্রযান নিয়ন্ত্রণ করে। রেডিও-নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা তাকে ডাইনে বাঁয়ে যখন যেদিকে পরিচালনা করে যানটি সেই দিকে চলে। বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়াররা পৃথিবীর বুকে স্বাভাবিক তাপমাত্রাযুক্ত ঘরে, আরামদায়ক চেয়ারে বসে টেলিভিশনের পর্দায় ছবি দেখেন, তাঁদের মনে হয় যেন তাঁরা নিজেরাই কোনো যানে চেপে চাঁদের বুকে চলেছেন। এমনকি তাঁরা ইচ্ছেমতো চন্দ্রযানকে থামিয়ে তার ‘হাত দিয়ে’ চন্দ্রমৃত্তিকা স্পর্শ করিয়ে জানতে পারেন সে মাটি শক্ত না ঝুরঝুরে, বার করতে পারেন তার উপাদান। পুরো ব্যাপারটা ছিল দারূণ কৌতূহলোদ্দীপক, মানুষের পক্ষে খুবই স্বাচ্ছন্দ্যকর আর সম্পূর্ণ নিরাপদ।

স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রগুলো মানুষকে বহু নতুন নতুন ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমেরিকানরা চাঁদে তাদের নভোচারীদের পাঠায়। খুব কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতে হলো তাদের। দীর্ঘ বছর ধরে এর জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়। তারা দুই ডজন বিশাল বিশাল রকেট তৈরি করল। প্রত্যেকটি তিরিশতলা বাড়ি সমান উঁচু। এই রকেটগুলোর মাথার ওপর চাপানো হলো বিরাট বিরাট ‘অ্যাপলো’ মহাকাশযান। পৃথিবীর চারধারে অনেকবার সেগুলো পরীক্ষামূলকভাবে উড়ল। তারপর উড়ল চাঁদের দিকে।

সূর্য পৃথিবীর ওপর আলো ফেলে এক দিক থেকে। এইজন্য পৃথিবীকে দেখায় কাস্তের মতো। আকাশে সূর্য পৃথিবীর যত কাছাকাছি আসে কাস্তেটা তত সরু হয়ে আসে।

চাঁদের বুকে মানুষ প্রথম পদার্পণ করল ১৯৬৯ সালে। প্রথম যাঁরা পদার্পণ করলেন তাঁরা হলেন মার্কিন নভোচারী নীল আর্মস্ট্রং ও এডউইন অলড্রিন। মোট ১২ জন আমেরিকান নভোচারী চাঁদে পাড়ি দেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে চাঁদে নেমে হালকা যানে চেপে চাঁদের জমির ওপর দিয়ে গেছেন।

মার্কিন নভোচারীরা চাঁদ থেকে চন্দ্রমৃত্তিকার বহু নিদর্শন ও আলোকচিত্র নিয়ে আসেন। তার চেয়ে বড় কথা, তাঁরা তাঁদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন। তাঁদের যাত্রার পর এবং আমাদের চন্দ্রযান ‘লুনোখোদ’-এর কাজের পর এখন আমি তুমি, আমরাও চাঁদে যাওয়ার কথা কল্পনা করতে পারি।

দুই দিনের মধ্যে রকেট আমাদের যথাস্থানে পৌঁছে দিল। এখন আমরা চাঁদে! আমরা রকেট থেকে বেরিয়ে আসি। আমাদের পরনে স্পেস স্যুট। এছাড়া এখানে অচল। চাঁদে বায়ু নেই, এখানে নিশ্বাস নেওয়া অসম্ভব। কিন্তু স্পেস স্যুটের ভেতরে বায়ু আছে।

চাঁদ পৃথিবীর চেয়ে ছোট, তাই তার আকর্ষণশক্তিও তুলনায় দুর্বল। এখানে সমস্ত জিনিস ছয় ভাগ হালকা হয়ে যায়। তুমি তোমার বন্ধুকে এক হাতে তুলে ধরতে পার—যেন তুলোয় ঠাসা একটা খেলার পুতুল।

আমরা এখানে এত হালকা যে অনায়াসে ইয়া চওড়া চওড়া খানাখন্দ লাফিয়ে পেরোতে পারি, এক লাফে উঁচু শিলার খাঁজে উঠে পড়তে পারি। মনে হয় অদৃশ্য কে যেন সর্বক্ষণ আমাদের সাহায্য করছে।

এখানে পড়ে যাওয়াটাও পৃথিবীর মাটিতে পড়ার মতো নয়। পড়ার সময় তুমি নামবে ধীরে ধীরে মনে হবে যেন পানিতে নামছ।

নীল আর্মস্ট্রং বলেন যে অসাবধানতাবশত কেউ যদি মুখ থুবড়ে পড়ে যায় তাহলেও চোট পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। উঠতেও কোনো অসুবিধা নেই। স্রেফ দুই হাতে নিচের মাটি ঠেলে দিলেই হলো। তিনি বলেন যে হালকা হয়ে যাওয়ার ফলে অনেক সময় তাঁকে অসুবিধার মধ্যেও পড়তে হয়।

হালকা মানুষের পা হালকা ভাবে জমির সঙ্গে চেপে থাকে, তাই পিছলে যায়—যেমন হয় বরফের ওপরে। যদি দাঁড়িয়ে থাক, তারপর পা ফেলে চলতে যাও তাহলে পা প্রথমে পিছলে যাবে। তাই ধীরে ধীরে, ছোট ছোট পা ফেলে গতিবেগ নিতে হয়। এরপর যখন দ্রুত হাঁটতে থাক তখনও চট করে থামা বা হঠাৎ মোড় নেওয়া সম্ভব নয়। পা পিছলে যাবে—হড়কে চলে যাবে। আগে থেকে ধীরে গতিবেগ কমিয়ে আনতে হয়।

চাঁদে সব সময় পরিপূর্ণ নিস্তব্ধতা। যত চিৎকারই কর না কেন কেউ শুনতে পাবে না। পৃথিবীতে শব্দ বায়ু মারফত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যায়। চাঁদে বায়ু নেই। যদি একেবারে কানের কাছেও কেউ ঘণ্টা বাজায় কিছুই শুনতে পাবে না। মনে হবে যেন লেপের ওপর ঘা মারছে।

এখানে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলতে পার কেবল রেডিওর মারফত কিংবা মাথা খাটিয়ে হাতের নানা রকম ইশারা-ইঙ্গিতে।

কী দেখা যায় চারপাশে? এখানে নেই কোনো গাছপালা, নেই কোনো ঘাস। মরুভূমি। এবড়োথেবড়ো জমি। যেন নানা রকম ঢেলা আর পাথর এখানে স্তূপাকার করে ফেলা হয়েছে, তারপর খানিকটা সমান করে দিয়ে ওপরে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ধূসর-খয়েরি রঙের ধুলো। সর্বত্র পাথর আর গর্ত। পায়ের নীচে ঠিকমতো দেখে যদি না চল তো হোঁচট খাবে।

চাঁদের গর্তগুলো প্রায়ই গোল গোল, ধারগুলো সামান্য ওঠা-ওঠা। যুদ্ধের সময় গোলা ফেটে মাটি ওলট-পালট হয়ে গিয়ে যেমন গর্ত হয় অনেকটা সেরকম দেখতে।

বড় বড় গহ্বরের মুখের চারপাশে গোল হয়ে আছে টিলার সারি। সবচেয়ে বড় গহ্বরগুলোর তলা—গোল, চ্যাপ্টা চত্বরের মতো। তাই সেগুলোকে দেখলে মনে হয় যেন গ্যালারি ঘেরা বিশাল বিশাল স্টেডিয়াম, কিংবা বিরাট বিরাট খোলা সার্কাসের মাঠ।

চাঁদের আকাশ আদৌ পৃথিবীর আকাশের মতো নয়। সে আকাশ নীল নয়, কালো। দিনে-রাতে একই রকম কালো। কেবল রাতে নক্ষত্রে ছায়া। দিনের বেলায়ও তাদের নিরীক্ষণ করা যায়, তবে সূর্য থেকে বা চাঁদের আলোকিত প্রান্তর থেকে তোমার চোখ আড়াল করে রাখতে হবে।

সূর্য ছাড়াও কালো আকাশে ঝুলছে পৃথিবী। নীল, প্রকাণ্ড, মনে হয় যেন সাদা কিছু দিয়ে আগাগোড়া মাখানো। এগুলো হলো আমাদের মেঘ।

মজার ব্যাপার এই যে আকাশে সূর্য চলছে, কিন্তু পৃথিবী এক জায়গায় স্থির হয়ে আছে। এমন হওয়ার কারণ এই যে চাঁদ পৃথিবীকে সব সময় দেখছে এক দিক থেকে, যেমন দাঁড় বাঁধা কুকুরছানাটা বাচ্চা মেয়েটির চারধারে ছোটার সময় তাকে দেখতে পেয়েছিল। তোমাদের মনে আছে তো?

সূর্য পৃথিবীর ওপর আলো ফেলে এক দিক থেকে। এইজন্য পৃথিবীকে দেখায় কাস্তের মতো। আকাশে সূর্য পৃথিবীর যত কাছাকাছি আসে কাস্তেটা তত সরু হয়ে আসে। আবার সূর্য যখন পৃথিবীর পাশ দিয়ে যায় তখন পৃথিবীকে দেখায় একটা ছোট রুপোলি বলয়ের মতো।

চাঁদের আকাশে সূর্য খুব ধীরে ধীরে ভেসে চলে। এখানে একদিন যেতে পুরো দুই সপ্তাহ কেটে যায়।

দিন এত দীর্ঘ বলে সূর্যের তাপে চাঁদের পাথর এত গনগনে গরম হয়ে ওঠার সময় পায় যে তার ওপরে খাবার পর্যন্ত রান্না করা যায়, যেমন তোমরা কর উনুনে। বেশ সুবিধার। তাই না?

তবে হ্যাঁ, হুশিয়ার থাকবে যখন রাত শুরু হচ্ছে। রাতও এখানে স্থায়ী হচ্ছে দুই সপ্তাহ। চারপাশের শিলা চোখ জুড়িয়ে যায়। কড়া হিম পড়ে। কয়েক দিনের মধ্যে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ১৫০ ডিগ্রী পর্যন্ত নীচে নেমে যায়। এদিকে সূর্য কিন্তু শিগগির উঠছে না! এমন ‘আবহাওয়ায়’ ঘরে চুল্লির পাশে বসে থাকাই ভালো। চাঁদে থাকাটা আরামের কিছু তো নয়ই, বরং ভয়ের।

(চলবে...)

মূল: পাভেল ক্লুশান্‌ৎসেভ

অনুবাদ: অরুণ সোম