২০২৫ সালের আগে পৃথিবীতে ফেরা হচ্ছে না নভোচারী সুনিতা ও উইলমোরের

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকা দুই নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও ব্যারি উইলমোর

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকা দুই নভোচারী ভাগ্য সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। গত ২৪ আগস্ট শনিবার এক বিবৃতিতে নাসার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফেরানো হবে তাঁদের।

মাত্র ৮ দিনের মহাকাশ ভ্রমণে গিয়েছিলেন সুনিতা উইলিয়ামস ও ব্যারি উইলমোর। পৃথিবী থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন ৫ জুন। কিন্তু মহাকাশযানের ত্রুটির কারণে ৮ দিনের ভ্রমণ এখন প্রায় ৮ মাসে দাঁড়িয়েছে। আর তাঁদের বোয়িং স্টারলাইনের যে নভোযানটি মহাকাশে নিয়ে গিয়েছিল, সেটা একাই পৃথিবীতে ফিরে আসবে।

মূলত এই নভোযানের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই দুই নভোচারীর এই হাল। নভোযানটি ফুটো হয়ে হিলিয়াম গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছিল। তাছাড়া সমস্যা দেখা দিয়েছিল ইঞ্জিনেও। সবকিছু বিবেচনা করে আপাতত মহাকাশেই রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই দুই নভোচারীকে।

নাসা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, স্টারলাইনের ক্যাপসুলে আর ফিরবেন না এই দুই নভোচারী। পরিবর্তে তাঁরা ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের ড্রাগন ক্যাপসুলে পৃথিবীতে আসবেন। বাণিজ্যিকভাবে নভোচারীদের মহাকাশে পাঠাতে বোয়িং এবং স্পেসএক্সের সঙ্গে কোটি কোটি ডলারের চুক্তি করেছে নাসা। ইতিমধ্যে স্পেসএক্স ৯টি সফল মহাকাশ যাত্রা করেছে। তবে বোয়িংয়ের জন্য এটা ছিল প্রথম মহাকাশ যাত্রা। তাতেই বিফল হলো কোম্পানিটি।

আরও পড়ুন
নাসা হয়ত এই দুই নভোচারীকে নিয়ে একটু বেশিই সতর্কতা অবলম্বন করছেন। কারণ, ১৯৮৬ সালে চ্যালেঞ্জার মিশন ও ২০০৩ সালের কলম্বিয়া মিশনে ১৪ জন নভোচারী মারা গিয়েছিল। সে জন্য আর কোনো মিশনে ঝুঁকি নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
নাসার নভোচারী বুচ উইলমোর ও সুনি উইলিয়াম (ডানে)
নাসা

কিন্তু দুই নভোচারী এতদিন মহাকাশে থাকবেন কেন? আসলে সবকিছু ঠিক করে তাঁদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে এতটা সময় লাগবেই। আগামী সেপ্টেম্বরে পরবর্তী মহাকাশযান পাঠানোর কথা স্পেসএক্সের। সেখানে ৪ জন নভোচারীর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আপাতত ওই মিশনে নভোচারী যাবেন ২ জন। আর ফেরার সময় সুনিতা ও উইলমোরকে নিয়ে পৃথিবীতে ফিরবে। ফিরতে ফিরতে ফেব্রুয়ারি মাস লেগে যাবে।

নাসা হয়ত এই দুই নভোচারীকে নিয়ে একটু বেশিই সতর্কতা অবলম্বন করছেন। কারণ, ১৯৮৬ সালে চ্যালেঞ্জার মিশন ও ২০০৩ সালের কলম্বিয়া মিশনে ১৪ জন নভোচারী মারা গিয়েছিল। সে জন্য আর কোনো মিশনে ঝুঁকি নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

তবে মহাকাশে থাকতে দুই নভোচারীর কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে। তাছাড়া দীর্ঘদিন মহাকাশে থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁদের দুইজনেরই। এর আগে, টানা ৩২২ দিন মহাকাশে থেকে সবচেয়ে বেশি দিন মহাকাশে থাকা নারীর রেকর্ড গড়েছিলেন ৫৮ বছর বয়সী সুনিতা উইলিয়ামস। আগেও তিনবার মহাকাশে গিয়েছেন তিনি। আর ৬১ বছরের ব্যারি উইলমোরেরও এর আগে তিনবার মহাকাশে যাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

সূত্র: স্পেস ডট কম ও বিবিসি

আরও পড়ুন