ধ্রুবতারা কেন নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে না

ধ্রুবতারা। রাতের আকাশের উত্তর দিকে তাকালে মিটমিট করে জ্বলতে দেখা যায়। যেন আমাদের দিকে তাকিয়ে হাসছে। অনেকে আবার একে উত্তরের নক্ষত্র বা পোলারিস বলেন। আকাশ মেঘে ঢাকা না থাকলে বছরের যেকোনো সময় রাতের আকাশে একে দেখা যায়। সবসময় উত্তর দিকেই দেখবেন। কেউ ভাবতে পারেন, এই ধ্রুবতারা কি নিজের অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে? এ এক রহস্য বটে! চলুন, সে রহস্যের জট খোলা যাক!

ধ্রুবতারা হলো আরসা মাইনর নক্ষত্রপুঞ্জে অবস্থিত একটি পরিবর্তনশীল সেফিড বা বিষম তারা। এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৪৪৮ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এই অবস্থান আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র সিরিয়াস থেকে প্রায় ৫২ গুণ দূরে। মূলত দূরত্বের কারণেই ধ্রুবতারাকে বেশি উজ্জ্বল দেখায় না। এটি F7I বর্ণালি শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত, যা সূর্যের চেয়ে ১ হাজার ২৬০ গুণ বেশি উজ্জ্বল। দেখতে বিশাল হলদে নক্ষত্রের মতো। সময়ের সঙ্গে এর উজ্জ্বলতা বাড়ে-কমে। এই নক্ষত্রগুলো প্রায় ২৬ হাজার বছরের জন্য একটা নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘোরে। তখন এগুলো পৃথিবী থেকে দেখা যায়। ফলে এ নক্ষত্রকে পৃথিবী থেকে স্থির মনে হয়।

আসলে মহাবিশ্বের সব বস্তু ঘুরতে বাধ্য। ফলে ঘুরছে ধ্রুবতারাও। কিন্তু পৃথিবীর অক্ষের ওপর এর ঘূর্ণনের গতি একই হওয়ায় আপাতদৃষ্টিতে পৃথিবী থেকে ধ্রুবতারাকে মনে হয় নিশ্চল।

যদিও বেশির ভাগ সময় ধ্রুবতারাকে গতিহীন মনে হয়, তবে এটি একটুখানি হলেও মহাকাশে গতিশীল। আসলে ধ্রুবতারা প্র‍তিবছর ০.১৪ আর্কসেকেন্ড গতিতে চলে। এই পরিমাণ খুব ছোট। এক আর্কসেকেন্ড বলতে ১/৩৬০০ ডিগ্রি বোঝায়।

আসলে মহাবিশ্বের সব বস্তু ঘুরতে বাধ্য। ফলে ঘুরছে ধ্রুবতারাও। কিন্তু পৃথিবীর অক্ষের ওপর এর ঘূর্ণনের গতি একই হওয়ায় আপাতদৃষ্টিতে পৃথিবী থেকে ধ্রুবতারাকে মনে হয় নিশ্চল। তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ধারণা, পৃথিবী থেকে আমরা যে ধ্রুবতারা দেখি, তা আসলে একটা নক্ষত্র নয়। এখানে একাধিক তারা রয়েছে, যেগুলোকে খালি চোখে একটি তারা হিসেবে দেখি আমরা।

সূত্র: গায়া স্পেস মিশন, উইকিপিডিয়া

লেখক: শিক্ষার্থী, দশম শ্রেণি, সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়