অ্যাস্ট্রোনমি ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার ২০২৪

রাতের আকাশ, নক্ষত্র, গ্রহ, উপগ্রহ—মহাবিশ্বের অপার রহস্য আমাদের সব সময় মুগ্ধ করে। ফটোগ্রাফার বা আলোকচিত্রীরা ক্যামেরায় সেসব রহস্যের কিছু ধারণ করতে পারেন। প্রতিবছর ইংল্যান্ডের রয়েল মিউজিয়ামস গ্রিনউইচ আয়োজন করে ‘অ্যাস্ট্রোনমি ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার’ প্রতিযোগিতা। সেখানে নিজেদের অসাধারণ দক্ষতা ও সৃজনশীলতা প্রদর্শন করেন বিশ্বের সেরা জ্যোতির্বিদ্যাবিষয়ক ফটোগ্রাফাররা।

এ বছর ১৬তম ‘অ্যাস্ট্রোনমি ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার’ প্রতিযোগিতায় ৫৮টি দেশের পেশাদার ও শখের আলোকচিত্রীর কাছ থেকে প্রায় ৩ হাজার ৫০০টি ছবি জমা পড়ে। সেখান থেকে বাছাইকৃত সেরা ছবিগুলোর সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানচিন্তার পাঠকদের জন্য এ তালিকার সেরা ১০টি ছবি প্রকাশিত হলো।

১ / ১০

১. আর্কটিক ড্রাগন

আর্কটিক ড্রাগন নামে পরিচিত এটি একটি অরোরা। আইসল্যান্ডের আর্কটিক হেঞ্জ থেকে এই অসাধারণ দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে। সে রাতে আইসল্যান্ডের বেশির ভাগ জায়গাই ছিল মেঘাচ্ছন্ন। কিন্তু হেঞ্জের আকাশ ছিল পরিষ্কার। সেখান থেকেই ছবিটি তুলেছেন কারিনা লেটেলিয়ার বায়েজা।

২ / ১০

২. পূর্ণ সূর্যগ্রহণ

পূর্ণ সূর্যগ্রহণ সম্ভবত প্রকৃতির সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর দৃশ্যগুলোর একটি। আর এই নান্দনিক ছবিটি তুলেছেন গুয়েনেল ব্ল্যাঙ্ক। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে তিনি অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ করেন সূর্যগ্রহণ দেখতে। ৬২ সেকেন্ড স্থায়ী হয় এ সূর্যগ্রহণ। এর মধ্যেই তিনি অসাধারণ কিছু ছবি ক্যামেরাবন্দি করেছেন। তাঁর তোলা ৭টি ছবির সমন্বয়ে এই ছবি তৈরি করা হয়েছে।

৩ / ১০

৩. এম১০০ ও সেরেস

ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি সর্পিলাকার গ্যালাক্সির বাহুতে একটি বামন গ্রহ। নাম সেরেস। এই সুন্দর দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি করেছেন ফটোগ্রাফার ড্যামন মিচেল স্কটিং। গ্যালাক্সির তুলনায় এই বামন গ্রহ আরও বেশি উজ্জ্বল দেখাচ্ছে। ছবিটি তুলতে তিনি প্রায় টানা ৮ ঘন্টা ব্যয় করেছেন।

৪ / ১০

৪. সর্পিল গতি

এই ছবিটি স্নেটশাম সৈকতকে কেন্দ্র করে তোলা। জোয়ারের সময় এই সমুদ্রের পানি শুকিয়ে যায়, দেখা যায় কাদামাটি। এ জন্যই সমুদ্রটি বিখ্যাত। ছবিতে একটা জেটি বা জাহাজঘাটা দেখা যাচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নির্মিত হয়েছিল এই জেটি। ছবিতে আকাশ ও পাতাল যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। ছবিটি তুলেছেন পল হাওয়ার্থ।

৫ / ১০

৫. গ্যালাক্সিখেকো

সিজি৪ (কমেটারি গ্লোবিউল ৪) মহাকাশের ধূলিকণা ও গ্যাসের অদ্ভুত এক আকৃতি। পাপিস তারকামণ্ডলে এর অবস্থান। এর মাথাটি প্রায় ১.৫ আলোকবর্ষ বিস্তৃত। ছবিটি তোলা হয়েছে একটি শক্তিশালী নিউটনিয়ান ৫০০ মিলিমিটার টেলিস্কোপের সাহায্যে।

৬ / ১০

৬. সৌরপ্লাজমায় আঁকা তিমি

এডুয়ার্ডো শ্যাবার্গার পউপিউ ছবিটি তুলেছেন। এখানে সৌরপৃষ্ঠে বিশাল এক তিমি আকৃতির প্লাজমা দেখা যাচ্ছে। এডুয়ার্ডো একদিন সূর্যের দিকে টেলিস্কোপ তাক করে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে দৃশ্যটি দেখতে পান। তখনই ছবিটি তুলে রাখেন তিনি।

৭ / ১০

৭. ভ্যালকেরির সঙ্গে এক রাত

ছবিটি তোলা হয়েছে আইস্ট্রাহর্ন পর্বত থেকে। কেপি৭ নামে এক ঝড়ের সময়ের ছবি এটি। ছবিতে ঝড়ের তীব্রতায় আকাশে অরোরা তৈরি হয়েছে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে চার্জযুক্ত কণা প্রবেশ করলে এমন অরোরা তৈরি হয়। ফলে আকাশের সংশ্লিষ্ট অংশে দেখা যায় লাল, নীল ও বেগুনি রঙের ছোঁয়া। ছবিতে আকাশের বর্ণিলতায় যেন দেখা যাচ্ছে নর্স মিথোলজির ভ্যালকেরি। ছবিটি তুলেছেন হোসে মিগুয়েল পিকন চিমেলিস।

৮ / ১০

৮. আইএসএস-র চন্দ্রসংক্রান্তি

ছবিতে চাঁদের ৫১ শতাংশ দেখা যাচ্ছে। বাকিটা রয়েছে অন্ধকারে। সামনে দেখা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। এটি আসলে চাঁদকে অতিক্রম করে যাচ্ছে। ছবিটি তুলেছেন মার্কিন ফটোগ্রাফার কেলভিন হেনেসি।

৯ / ১০

৯. শনির হাফ ডজন চাঁদ

ছবিতে মূলত শনির হেলানো বলয় ও টাইটান নামের উপগ্রহটি দেখা যাচ্ছে। ভালোভাবে খেয়াল করলে আরও কিছু সাদা ফুটকির মতো দেখতে পাবেন। এগুলো আসলে শনির উপগ্রহ। টাইটান বড় বলে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ওটা। বাকিগুলো হলো, বাঁয়ে রিয়া, এনসেলাডাস ও মিমাস এবং ডানদিকে নিচে ডায়োন উপগ্রহ। ছবিটি তুলেছেন অ্যান্ডি কেসলি।

১০ / ১০

১০. মহাজাগতিক আতশবাজি

স্পেনের লা পামায় ধারণ করা হয়েছে ছবিটি। এটি উল্কাবৃষ্টির ছবি। জ্যাকব সাহনার প্রতি মিনিটে ক্যামেরার সাহায্যে দুই থেকে তিনটি বা কখনো তারও বেশি উল্কার দৃশ্য ধারণ করেছেন। এখানে জেমিনিড উল্কার পাশাপাশি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিও দেখা যাচ্ছে।

লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ

সূত্র: রয়েল মিউজিয়ামস গ্রিনউইচ ও সায়েন্স ফোকাস