আল্ট্রাভায়োলেট শব্দটি যেভাবে পেলাম

নতুন কিছু আলাদাভাবে চিহ্নিত করাসহ নানা কারণেই নাম দিতে হয়। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও কথাটি সত্য। এসব নামের পেছনেও লুকিয়ে থাকে মজার ইতিহাস। চলুন, আজ জেনে নিই বর্নালি শব্দটি কীভাবে এল

উইলিয়াম হার্শেল বর্ণালি রেখার লাল রঙের নিচে অবলোহিত আলো শনাক্তের পর অদৃশ্য আলো নিয়ে অনেকেই কৌতূহলী হয়ে ওঠেন। হার্শেল যেখানটায় নজর দেননি, ঠিক সেখানটাতেই তাড়াহুড়ো করে নজর বুলাতে লাগলেন অন্যরা। তবে সফল হয়েছিলেন একজন। তিনি জার্মান পদার্থবিদ জোহান উইলহেম রিটার। ১৮০১ সালে তিনি বর্ণালি রেখায় আরেকটি অদৃশ্য আলোর খোঁজ পেলেন। এ ক্ষেত্রে থার্মোমিটার ব্যবহার না করে রিটার ব্যবহার করলেন আলোসংবেদী সিলভার ক্লোরাইডে ভেজানো একটি কাগজ। প্রতিটি দৃশ্যমান আলো ছাড়াও বর্ণালির বেগুনি প্রান্তের পরে অন্ধকার এলাকায় এটি ব্যবহার করেছিলেন তিনি। তাতে বেগুনি আলোর তুলনায়  অদৃশ্য আলোর নিচের সিলভার ক্লোরাইডে ভেজানো কাগজটি দ্রুত গাঢ় হয়ে গিয়েছিল।

দৃশ্যমান আলো থেকে অতিবেগুনি রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য ছোট, তবে এক্স-রের চেয়ে বড়। এই বিদ্যুত্চুম্বকীয় বিকিরণের তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১০ থেকে ৪০০ ন্যানোমিটার। ২০০ ন্যানোমিটারের নিচের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের নিচের অতিবেগুনি রশ্মিকে বলা হয় ভ্যাকুয়াম আল্ট্রাভায়োলেট।

এই অদৃশ্য আলোর রাসায়নিক সক্রিয়তার বৈশিষ্ট্যের প্রতি জোর দিতে এবং একে তাপরশ্মি থেকে আলাদা করতে রিটার শুরুতে এর নাম দিলেন অক্সিডাইজিং রে বা রশ্মি। উনিশ শতক পর্যন্ত এটি রাসায়নিক রশ্মি নামে পরিচিত ছিল। অন্যদিকে ইনফ্রারেডকে বলা হতো তাপীয় রশ্মি। এখন এই রাসায়নিক রশ্মি আল্ট্রাভায়োলেট বা ইউভি (টঠ) নামেই বেশি পরিচিত। লাতিন আল্ট্রা উপসর্গ অর্থ ছাড়িয়ে বা সীমানার বাইরে বা চরম। অর্থাৎ, আল্ট্রাভায়োলেট শব্দের সরল অর্থ বেগুনি আলোর বাইরে। বাংলায় এর অর্থ করা হয়েছে অতিবেগুনি।

আরও পড়ুন

দৃশ্যমান আলো থেকে অতিবেগুনি রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য ছোট, তবে এক্স-রের চেয়ে বড়। এই বিদ্যুত্চুম্বকীয় বিকিরণের তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১০ থেকে ৪০০ ন্যানোমিটার। ২০০ ন্যানোমিটারের নিচের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের নিচের অতিবেগুনি রশ্মিকে বলা হয় ভ্যাকুয়াম আল্ট্রাভায়োলেট। কারণ, এটি বাতাসে শোষিত হয়। এই বিদ্যুত্চুম্বকীয় বিকিরণ ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে পারে এই ব্যাপারটি ১৮৭৮ সালে আবিষ্কৃত হয়। এ ক্ষেত্রে ২৫০ ন্যানোমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি কার্যকর। ১৯৬০ সালে ডিএনএর ওপর এই বিকিরণের প্রভাব প্রমাণিত হয়।

*লেখাটি বিজ্ঞানচিন্তার ডিসেম্বর ২০১৭ সংখ্যায় প্রকাশিত

আরও পড়ুন