অবশেষে ম্যাটেরিয়ালাইজার যন্ত্রটা বানানো শেষ হলো।
স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে নেড কুইন একটু পিছিয়ে দাঁড়াল। হাতের ময়লা ঝাড়তে ঝাড়তে তাকিয়ে দেখতে লাগল নিজের হাতে বানানো যন্ত্রটা। চোখেমুখে মুগ্ধতা। যন্ত্রটার একগাদা ডায়াল, লাইট আর সুইচ দেখে তারিফ করতে লাগল মনে মনে।
বেশ কয়েক বছর ধরে এই যন্ত্রের পেছনে লেগে আছে নেড কুইন। নাওয়া-খাওয়া ভুলে দিন-রাত একনাগাড়ে পরিশ্রম করেছে। প্রজেক্টটির পেছনে অর্থকড়িও গেছে জলের মতো। এত দিন পর অবশেষে কাজটা শেষ হলো। যন্ত্রটা এখন রেডি।
হাত বাড়িয়ে নিজের মাথায় পরা হেলমেটের মতো ধাতব ক্যাপটা স্পর্শ করল নেড। ক্যাপ থেকে বেরিয়ে আসা তারগুলো আলতো করে কন্ট্রোলার প্যানেলে ঢুকিয়ে দিল সে। এরপর সুইচ অন করে বলল, ‘দশ ডলারের নোট।’
ম্যাটেরিয়ালাইজারের ভেতর কিছু একটা ঘোরার শব্দ হলো। মৃদু যান্ত্রিক ঘর্ঘর শব্দ। চোখের পলকে রিসিভারে কাগজের মতো কিছু একটা হাজির হলো। সেটা হাতে তুলে পরীক্ষা করল নেড। একেবারে সত্যি নোট। চকচকে নোট।
এবার রিসিভারটা টেনে আগের চেয়ে বড় করল নেড। সবচেয়ে সেরা পরীক্ষা করতে প্রস্তুত হলো সে। বিপুল ধনসম্পত্তি ছাড়াও তার আরেক আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল কুৎসিত কিছু কারণে
‘কোল্ড ড্রিংকস,’ সে এবার নির্দেশ দিল যন্ত্রটাকে।
আবারও যান্ত্রিক ঘর্ঘর শব্দ ভেসে এল। চোখের পলকে রিসিভারটা পানির মতো কিছু একটায় ভরে গেল। ছোটখাটো একটা জলাশয় তৈরি হলো যেন।
‘ধুর!’ ফোঁস করে নিজেকেই গালি দিল নেড। বুঝতে পারল, তাকে এখনো অনেক কিছু শিখতে হবে।
‘এক বোতল কোল্ড ড্রিংকস,’ নেড বলল।
আবারও যান্ত্রিক ঘর্ঘর শব্দ। পরিচিত একটা বাদামি বোতল বেরিয়ে এল রিসিভারে।
ছিপি খুলে একটু চেখে দেখল নেড। দাঁত বের করে হাসতে লাগল। এবার ঠিক আছে।
হাসতে হাসতে আরও কিছু পরীক্ষা করে দেখার কথা ভাবল নেড।
এবার রিসিভারটা টেনে আগের চেয়ে বড় করল নেড। সবচেয়ে সেরা পরীক্ষা করতে প্রস্তুত হলো সে। বিপুল ধনসম্পত্তি ছাড়াও তার আরেক আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল কুৎসিত কিছু কারণে। সেটা বোধ হয় কারও কারও মনের গভীর অন্ধকারে লুকিয়ে থাকে। সময়-সুযোগ পেলেই লাফিয়ে বেরিয়ে আসে।
ম্যাটেরিলাইজারের সুইচ আবারও অন করল নেড কুইন। লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে বলল, ‘মেয়ে।’
যন্ত্রটা ঘর্ঘর শব্দ করল। তারপর মিলিয়ে গেল সে শব্দ। ম্যাটেরিয়ালাইজারের রিসিভারে সত্যিই একটা মেয়েকে দেখা গেল। মিষ্টি একটা মেয়ে।
ছোটখাটো মেয়েটার মুখভরা ছোট ছোট দাগ। গোটা দাঁতে ধাতব ব্রেস আঁটা। মাথার চুলে বেণি বাঁধা। পিগটেইল।
ভালোমতো খেয়াল করে নেড বুঝতে পারল, মেয়েটা মাত্র আট বছর বয়সী। বিরক্তি আর রাগে ভ্রু কুঁচকে গেল তার।
‘ধুর! আস্ত একটা জাহান্নাম!’ নিজের অজান্তেই বলে বসল নেড কুইন।
যান্ত্রিক ঘর্ঘর শব্দটা শোনা গেল আবারও...মৃদু...
সেদিন ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে দুটি পোড়া কঙ্কাল উদ্ধার করল ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা। একটা ছোটখাটো দেহের। আরেকটা প্রাপ্তবয়স্ক কারও।