হৈটি টৈটি

হৈটি টৈটি - প্রথম পর্ব

‘কী আবার, আমার ঘড়ির মাথামুণ্ডু কিছুই হাতিটা বোঝেনি। একটা চকচকে গোল জিনিসকে সে কেবল তার চোখের সামনে ধরেছিল। কার্ডবোর্ডগুলোয় সে যখন সংখ্যা বাছছিল তখন স্পষ্টতই ট্রেইনারের কোনো একটা নির্দেশ মেনে চলছিল সে, যা আমরা ধরতে পারছিলাম না...

হৈটি টৈটি - দ্বিতীয় পর্ব

সেই সন্ধ্যাতেই সার্কাস অনুষ্ঠানের পর প্রফেসর ভাগনারের সঙ্গে দেখা হলো হৈটি টৈটির। রঙ্গভূমিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন শত্র্ম, ভাগনার আর দেনিসভ; খেলোয়াড়দের প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকল হৈটি টৈটি, তখনো পিঠে তার ইয়ুঙ্গ। ভাগনারকে দেখেই সে ছুটে এল তার কাছে, শুঁড় বাড়িয়ে যেন করমর্দন করল। তারপর ইয়ুঙ্গকে নামিয়ে ভাগনারকে তুলে নিল পিঠে...

হৈটি টৈটি - তৃতীয় পর্ব

বন ভেদ করে এগোনো ভারি দুষ্কর, আবার খোলা জায়গা দিয়ে হাঁটাও কম দুরূহ নয়। ঘন ঘাস, মোটা মোটা ডাঁটা, লম্বায় ৪ মিটার। হাঁটতাম যেন দুই সবুজ দেয়ালের মাঝখান দিয়ে—চারপাশের কিছুই দেখা যায় না। ভয়ই লাগে! ঘাসের ধারালো পাতে ছড়ে যায় হাত–মুখ। পা ফেললে একেবারে পায়ে পায়ে জড়িয়ে যায়...

হৈটি টৈটি - চতুর্থ পর্ব

স্পষ্টতই ইতস্তত করছিল হাতিটা। বোঝা যায়, অপরিচিত একটা গন্ধের সাক্ষাৎ পেয়েছে সে। কী ধরনের বিপদ জড়িয়ে আছে এ অজানা গন্ধের সঙ্গে, দ্বিধাগ্রস্তভাবে একটু এগোল হাতিটা, ওই অদ্ভুত গন্ধ কোথা থেকে আসছে, সম্ভবত তা দেখার জন্য। এগোল কয়েক পা, তারপরই আটকে গেল প্রথম ফাঁসটায়। সামনের পা দিয়ে টান মারল সে, কিন্তু অদৃশ্য বাঁধন খসল না। আরও জোরে টান মারল হাতিটা...

হৈটি টৈটি - পঞ্চম পর্ব

দুপেয়ে জন্তুর গন্ধ পেলাম, কোনো এক দেশীয় আফ্রিকানের ঘামের গন্ধ। সেই সঙ্গে মিশে আছে সাদা চামড়ারও একটা গন্ধ; সম্ভবত নৌকা থেকে আমায় যে গুলি করেছিল, সে-ই। তার মানে ফের আমার পিছু নিয়েছে। হয়তো এই মুহূর্তে কোনো একটা ঝোপের আড়ালে দাঁড়িয়ে আছে সে, বন্দুকের নল তাক করছে আমার চোখ আর কানের মাঝখানে বিপজ্জনক ছোট্ট জায়গাটার দিকে...ঝট করে লাফিয়ে উঠলাম। গন্ধটা আসছিল ডান দিক থেকে, তার মানে আমাকে ছুটতে হবে বাঁ দিকে...

হৈটি টৈটি - ষষ্ঠ পর্ব

একদিন খোলা মাঠে চরছি, চারদিকে তৃণের আর শেষ নেই। পাহারার পালা আমার। তারায় ভরা রাত, চাঁদ নেই আকাশে। পালের সবাই খানিকটা চুপচাপ। আমি খানিকটা এগিয়ে গিয়েছিলাম একটু ভালো করে শোনার আর গন্ধ নেওয়ার জন্য। কিন্তু গন্ধ যা পাচ্ছিলাম সে কেবল ঘাসের, কাছাকাছি নিরীহ ছোটখাটো সরীসৃপ আর জীবজন্তুর। হঠাৎ অনেক দূরে, প্রায় দিগন্তরেখায় একটা আলো দেখা গেল। আলোটা নিভে গিয়ে আবার জলে উঠল আগুনের শিখায়

হৈটি টৈটি- শেষ পর্ব

সাহস পেয়ে ওরা আমার আরও কাছে সরে এল, শেষ পর্যন্ত শুঁড়টা বাড়িয়ে ছেলেটিকে ডাক দিলাম দোলার জন্য। কিছুটা ইতস্তত করে ছেলেটা বসল আমার বাঁকানো শুঁড়ের ওপর, দোল খেতে লাগল। খুকিটিকেও দোল খাওয়ালাম একটু। সত্যি বলতে কি, এই নিশ্চিন্ত শ্বেতকায় খোকাখুকির সাহচর্যে এত আনন্দ হয়েছিল যে একেবারে তন্ময় হয়ে খেলতে লাগলাম ওদের সঙ্গে। লক্ষই করিনি কখন এসে দাঁড়িয়েছে একটা লম্বাটে রোগা লোক। গায়ের চামড়া হলদেটে, কোটরে ঢোকা চোখ

বিজ্ঞান কল্পগল্প থেকে আরও পড়ুন