একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার

একবার এক জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ার ঘোষণা দিল, তার নোবেল প্রাইজ পাওয়া অতি জরুরি।

—কেন? সাংবাদিকেরা জানতে চায়।

—কারণ, আমি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে যে যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছি, তার জন্য বিজ্ঞানে আমার নোবেল পেতেই হবে। বিষয়টা ম্যান্ডেটরি হয়ে গেছে।

—আপনি কী আবিষ্কার করেছেন?

—আমি সুদীর্ঘ ১২ বছর মানবকোষের ডিএনএর ওপর কাজ করে বায়োলজিক্যালি মানুষের ভেতর এক মৌলিক পরিবর্তন আনতে সমর্থ হয়েছি।

—কী পরিবর্তন?

—ছোট বাথরুম করার জন্য এখন আর কাউকে টয়লেট খুঁজতে হবে না। যেখানে-সেখানে এ কাজ করতে পারবে। বিশেষ করে দুর্গম এলাকায় ভ্রমণে গেলে, যেখানে টয়লেট থাকে না, সেখানে এই প্রক্রিয়া অতি কার্যকর।

—কী রকম?

—আপনি আপনার ডান কান দিয়েই দিব্যি পি করতে পারবেন...।

আরও পড়ুন
টিভিতে টক শো হতে লাগল। দুর্গম এলাকার ট্রাভেলাররা তাকে অতি শিগগির নোবেল দেওয়ার জন্য নোবেল কমিটির কাছে আবেদন জানাল

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারের এই যুগান্তকারী আবিষ্কার অতি দ্রুত চারদিকে ভাইরাল হয়ে গেল; সবাই ধন্য ধন্য করতে লাগল। দেশি-বিদেশি সব পত্রিকায় বক্স নিউজ হলো, রেডিও-টিভিতে টক শো হতে লাগল। দুর্গম এলাকার ট্রাভেলাররা তাকে অতি শিগগির নোবেল দেওয়ার জন্য নোবেল কমিটির কাছে আবেদন জানাল। শুধু বাম রাজনীতি করে যারা, তারা তীব্র প্রতিবাদ জানাল, তারা কোনোক্রমেই ডান কান দিয়ে এ কাজ করতে রাজি নয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ার অবশ্য জানাল, প্রাথমিকভাবে শুধু ডান কান দিয়ে এই প্রক্রিয়া চললেও খুব শিগগির বাঁ কানেও তা করা সম্ভব হবে।

কিন্তু না, যুগান্তকারী এই আবিষ্কারক তার এই আবিষ্কারের কারণে পৃথিবী বিখ্যাত হয়ে গেলেও নোবেল কমিটি পুরস্কারের জন্য তাকে বিবেচনায় আনল না। বলা বাহুল্য, তার গবেষণার ওপর করা ডকুমেন্টারিটি কান পুরস্কার পেয়ে গেল।

লেখক: কার্টুনিস্ট; সম্পাদক, উন্মাদ

* লেখাটি বিজ্ঞানচিন্তার ডিসেম্বর ২০২২ সংখ্যায় প্রকাশিত

আরও পড়ুন