একটা ছোট্ট বাচ্চা তার বাবাকে প্রশ্ন করল, ‘আচ্ছা বাবা, জেমস ওয়েব ক্যামেরা দিয়ে কি সেলফি তোলা যাবে?’
বাচ্চার প্রশ্ন শুনে বাবা হকচকিয়ে গেলেন। বললেন, ‘অ্যাঁ হ্যাঁ...হয়তো যাবে। এক গ্যালাক্সি আরেক গ্যালাক্সির সঙ্গে ছবি তুলতেই পারে, তখন সেটাই হবে সেলফি!’
আসলে বাচ্চারা এমন সব প্রশ্ন করে, যার উত্তর কোনো জ্ঞানীরও জানা নেই কিংবা জানা থাকলেও সব সময় বলা সম্ভব হয়ে ওঠে না। যেমন আরেক বাচ্চা তার বাবাকে প্রশ্ন করল,
—বাবা, আমি কোথা থেকে এলাম?
বাচ্চাদের সেই চিরন্তন প্রশ্ন, যা মা–বাবাকে বিব্রত করে। বাবা মাথা চুলকে ফের সেই চিরন্তন রূপকথাই আওড়ালেন, ‘ইয়ে মানে, হয়েছে কি, একবার তোমার মা বাগানে বসে ছিলেন, এই সময় একটা বক ওপর থেকে টুপ করে তোমার মায়ের কোলে তোমাকে ফেলে চলে গেল!’
—বলো কী?
বাচ্চা খুবই আশ্চর্য হলো বলে মনে হলো।
এবার তার দ্বিতীয় প্রশ্ন,
—তাহলে বান্টি কী করে এল? বান্টি তার এক বছরের বড় বোন।
—অ্যাঁ...ইয়ে...ওই তো, আরেক দিন তোমার মা বাগানে বসে ছিলেন, তখন আরেকটা বক বান্টিকে টুপ করে তোমার মায়ের কোলে ফেলে গেল।
—সবই যদি মায়ের কোলে পড়ে! তাহলে তোমার দরকার কী?
শেষে আরেক বাচ্চার কাছে যাওয়া যাক। এই বাচ্চা আবার বিজ্ঞান জানা বাচ্চা, বিজ্ঞানের নানান প্রশ্ন তার মাথায় সব সময় ঘুরপাক খায়। সে প্রতিদিনই নানান প্রশ্ন করে করে তার বাবাকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে। কিন্তু বাবা কোনোটারই উত্তর দিতে পারেন না।
এরপর বাবা কী বলেছিলেন, তা জানা সম্ভব হয়নি। তবে এবার আরেক বাচ্চার কাছে যাওয়া যাক। সে তার বাবাকে একই প্রশ্ন করল,
—বাবা আমি কোথা থেকে এসেছি?
এই বাবা ভাবলেন, না, আর লুকোচুরি নয়। সত্য উদ্ঘাটন করবেন বাচ্চার কাছে। তিনি বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা দিয়ে...ছবি এঁকে সময় নিয়ে বোঝালেন কীভাবে মায়ের পেটে একটি অনাগত শিশুর ‘জাইগোট’ ফর্ম করে...কেন করে...বিতং বর্ণনা করে বোঝালেন। এবার বাচ্চা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। বলল, ‘এত ঝামেলা! কিন্তু পাশের বাসার রনি তো বলল, ও বরিশাল থেকে এসেছে!’
শেষে আরেক বাচ্চার কাছে যাওয়া যাক। এই বাচ্চা আবার বিজ্ঞান জানা বাচ্চা, বিজ্ঞানের নানান প্রশ্ন তার মাথায় সব সময় ঘুরপাক খায়। সে প্রতিদিনই নানান প্রশ্ন করে করে তার বাবাকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে। কিন্তু বাবা কোনোটারই উত্তর দিতে পারেন না। একদিন বাবা বললেন,
—আমি উত্তর দিতে পারছি না তাতে কি? তুমি প্রশ্ন করে যাও। প্রশ্ন না করলে শিখবে কোথা থেকে। বিজ্ঞানমনস্ক বাচ্চাও আগের বাচ্চাটির মতো একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। বলল,
—আচ্ছা বাবা, তুমি কি ছোটবেলায় আমার মতো কখনো দাদাকে প্রশ্ন করেছিলে?
—না, তা অবশ্য ওইভাবে করা হয়নি।
—তখন তাকে যদি প্রশ্ন করতে, তাহলে এখন আমার দু-একটা প্রশ্নের উত্তর হয়তো দিতে পারতে।