জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং

যখনকার কথা বলছি তখন পৃথিবীর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে। প্রকৃতির সব ফলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে বদলে ফেলা হয়েছে। যেমন তরমুজ কাটার পর তার বিচিগুলো নিজ থেকে উড়ে উড়ে দিব্যি সরে পড়ে। যেন তারা এক একটা একটা জীবন্ত পোকা। কষ্ট করে আর তরমুজের পোকা বেছে বেছে খেতে হয় না। এই রকম যখন অবস্থা, তখন মানুষ জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল। এই ধাপ আরও ভয়াবহ। এর ওপর অফিশিয়ালি একটি সংবাদ সম্মেলন ডাকা হলো। এই সম্মেলনে ঘোষণা করা হবে মানুষ সর্বশেষ কী করতে পারে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে!

যথাসময়ে সংবাদ সম্মেলনে মানুষজন এসে হাজির হলো। সাংবাদিকেরা তো আছেনই। প্রধান জেনেটিক বিজ্ঞানীও এসে উপস্থিত হলেন। এরপর এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। প্রধান জেনেটিক বিজ্ঞানী ঘোষণা দিলেন—

—জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে মানুষের ডিএনএতে আমরা এক পরিবর্তন আনতে সমর্থ হয়েছি, যে মানুষকে অন্য যেকোনো প্রাণীতে পরিবর্তন করা সম্ভব।

— বলেন কী? অসাধারণ।

— এ তো যুগান্তকারী আবিষ্কার!

— আমরা প্রমাণ দেখতে চাই! আমরা প্রমাণ দেখতে চাই!

— বেশ প্রমাণ দেখানো হবে। আপনাদের ভেতর থেকে পাঁচজনকে নির্বাচন করুন যাদের আমরা ২৪ ঘণ্টার জন্য অন্য কোনো প্রাণীতে পরিবর্তন করব। এখন হাত তুলুন কে কে ২৪ ঘণ্টার জন্য অন্য প্রাণীতে রূপান্তরিত হতে  চান, হাত তুলুন...

দেখা গেল পাঁচজন হাত তুলল।

আরও পড়ুন
প্রকৃতির সব ফলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে বদলে ফেলা হয়েছে। যেমন তরমুজ কাটার পর তার বিচিগুলো নিজ থেকে উড়ে উড়ে দিব্যি সরে পড়ে।

প্রধান বিজ্ঞানী বললেন, ‘আমাদের বিজ্ঞানীরা প্রস্তুত, ল্যাবও প্রস্তুত আছে, যন্ত্রপাতিও প্রস্তুত, এখন বলুন কে কী হতে চান? আপনারা নিজেদের মধ্যে আলোচনাও করে নিতে পারেন।’

সবার মধ্যেই একটা ফিস ফিস শুরু হলো আসলেই তো ওরা কী হতে চাইবে? কী কী হওয়া সম্ভব? পাঁচজনই আবার হাত তুলল।

হ্যাঁ বলুন, আপনারা কে কী হতে চান?

আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা তেলাপোকা হব—

তেলাপোকা? কেন?

ইয়ে...আমাদের সঙ্গীরা তেলাপোকা ভয় পায় কিনা।

লেখক: কার্টুনিস্ট

*লেখাটি ২০১৮ সালে বিজ্ঞানচিন্তার অক্টোবর সংখ্যায় প্রকাশিত

আরও পড়ুন