কসমিক অ্যালকেমি ও মৌলের রান্নাঘর

হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের জন্মরহস্যের সমাধান জানেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু জর্ম গ্যামো থেকে ফ্রেড হয়েল, বিগ গ্যাং তত্ত্বের শত্রু-মিত্র কেউই জানেন না, এই দুটো মৌল থেকে কীভাবে তৈরি হলো আরও ভারী সব পদার্থ। যেসব পদার্থ দিয়ে গঠিত মানুষ, পৃথিবীসহ মহাবিশ্বের বিভিন্ন গ্রহ-উপগ্রহগুলো। অবশেষে বিগ ব্যাং তত্ত্বের শত্রু ফ্রেড হয়েলের হাতেই হলো এই রহস্যের সমাধান। আজ এ বিজ্ঞানীর জন্মদিন। বিজ্ঞানচিন্তার পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।

মহাবিশ্বের নিউক্লীয়সিন্থেসিস বা হালকা থেকে ভারী বিভিন্ন মৌল কীভাবে তৈরি হলো, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের জল্পনাকল্পনা, তর্কবিতর্ক অনেক দিনের। হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম নিউক্লিয়াস গঠনের ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন বিগ ব্যাং মডেলের অন্যতম সমর্থক বিজ্ঞানী গ্যামো এবং তাঁর দুই শিষ্য আলফার ও হারমান। তাঁরা বললেন, এই দুটো হালকা মৌলের নিউক্লিয়াস বিগ ব্যাংয়ের কিছুক্ষণ পরই গঠিত হয়েছিল। কিন্তু বারবার হিসাব কষেও তাঁরা বলতে পারলেন না, এর পরের ভারী মৌলগুলো গঠিত হলো কীভাবে। বিগ ব্যাংয়ের পর মহাবিশ্ব অতি উত্তপ্ত ছিল সত্য; কিন্তু তা ভারী মৌল গঠনের জন্য যথেষ্ট নয়। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, কোন চুল্লিতে রান্না হলো এসব মৌল?

নক্ষত্রের কেন্দ্রও মহাবিশ্বের অন্যতম অতি উত্তপ্ত এক চুল্লি। সেখানকার প্রচণ্ড উত্তাপে হালকা মৌলগুলো পরস্পর জোড়া লেগে কি ভারী মৌলগুলো তৈরি হতে পারে? সে সম্ভাবনা নিয়েও ভেবেছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু হিসাব কষে দেখা গেল, নক্ষত্রের পৃষ্ঠতলের তাপমাত্রা মাত্র কয়েক হাজার ডিগ্রি আর কেন্দ্রের তাপমাত্রা কয়েক মিলিয়ন ডিগ্রি। হাইড্রোজেন নিউক্লিয়াস একত্র হয়ে ধীরে ধীরে হিলিয়াম তৈরি হওয়ার জন্য এই তাপমাত্রা যথেষ্ট, কিন্তু হিলিয়াম নিউক্লিয়াস থেকে আরও ভারী মৌল তৈরি হওয়ার জন্য তা পর্যাপ্ত নয়। এ জন্য প্রয়োজন আরও অন্তত ১০০ গুণ বেশি তাপমাত্রা। অর্থাৎ কয়েক বিলিয়ন ডিগ্রি তাপমাত্রা দরকার।

যেমন নিয়ন পরমাণু গঠনের জন্য প্রয়োজন তিন বিলিয়ন ডিগ্রি। আবার সিলিকন পরমাণুর জন্য দরকার আরও বেশি। প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডিগ্রি। এখানে আরেকটা সমস্যাও আছে। কোথাও যদি নিয়ন তৈরি হওয়ার মতো পর্যাপ্ত পরিবেশ থাকে, তাহলে সিলিকনের জন্য সেখানে তাপমাত্রা যথেষ্ট থাকবে না। আবার উল্টো দিকে, কোথাও সিলিকনের জন্য পর্যাপ্ত তাপমাত্রা বজায় থাকলে সবটুকু নিয়ন অন্য কোনো ভারী মৌলে রূপান্তরিত হয়ে যাবে। এসব দেখে মনে হয়, প্রতিটি পরমাণু তৈরির জন্য আলাদা পাত্র দরকার। কিন্তু সেই মহাজাগতিক পাত্রটা যে কী, তা কেউই বুঝতে পারছেন না। জমজমাট এক রহস্য!

সেই জট খুললেন বিগ ব্যাং মডেলের প্রধানতম শত্রু বিজ্ঞানী ফ্রেড হয়েল। তিনি বিগ ব্যাং তত্ত্বের কথা শুনতেই পারতেন না। বিদ্রূপ করে এর নাম দিয়েছিলেন ‘বিগ ব্যাং’। সেটাই পরে স্থায়ী হয়ে যায়। তিনি বললেন, মহাবিশ্বের মৌলগুলো মহাবিস্ফোরণে নয়; বরং রান্না হয়েছে বিভিন্ন নক্ষত্রের বুকে। নক্ষত্রের প্রচণ্ড তাপ ও চাপের কারণে যদি শ খানেক বা তার বেশি রাসায়নিক মৌল রান্না হয়ে থাকে, তাহলে মহাবিস্ফোরণ তত্ত্বের আর কোনো দরকার পড়ে না। এভাবে বিগ ব্যাংকে বাতিল করার কথা ভাবলেন হয়েল। শুরুতে বোঝার চেষ্টা করেন, কোনো নক্ষত্রে তার জীবনকালের বিভিন্ন পর্যায় কী কী ঘটে।

মধ্যবয়স্ক নক্ষত্রকে সাধারণত স্থিতিশীল থাকতে দেখা যায়। এসব নক্ষত্র হাইড্রোজেন ফিউজ করে অনবরত হিলিয়াম তৈরি করে। পাশাপাশি আলোকশক্তি বিকিরণ করে হারাতে থাকে বিপুল তাপ। একই সময় ওই নক্ষত্রের সবটুকু ভর তার নিজের মহাকর্ষের আকর্ষণে ভেতরের দিকে টানতে থাকে। কিন্তু নক্ষত্রটির কেন্দ্রে প্রচণ্ড তাপে বাইরের দিকে তৈরি হয় প্রচণ্ড চাপ। এই বল দুটি পরস্পরকে ঠেকিয়ে দেয়, যা নক্ষত্রটিতে ভারসাম্য আনে—অনেকটা বেলুনে ক্রিয়াশীল বলের ভারসাম্যের মতো। বেলুনের ক্ষেত্রে প্রসারিত রাবারের পৃষ্ঠ বেলুনটিকে ভেতরের দিকে চুপসে ফেলার চেষ্টা করে। কিন্তু বেলুনের ভেতরের বাতাস যে চাপ দেয়, তা বেলুনকে বাইরের দিকে ঠেলে দেয়। এভাবেই ভারসাম্যে থাকে বেলুন।

হয়েলের জিজ্ঞাসা ছিল, এই ভারসাম্য নষ্ট হলে কী ঘটে? তিনি বুঝতে চাচ্ছিলেন, নক্ষত্রের জীবনের শেষ পর্যায়ে হাইড্রোজেন জ্বালানি শেষ হয়ে গেলে কী হয়? জ্বালানি শেষ হলে নক্ষত্রটি শীতল হতে শুরু করলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু তাপমাত্রা হুট করে কমে যাওয়ায় নক্ষত্রটির বাইরের দিকের চাপও হুট করে ভেঙে পড়ে। তখন মহাকর্ষের আকর্ষণটাই বেশি ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে। স্বাভাবিকভাবে নিজের মহাকর্ষের প্রভাবে নক্ষত্রটি চুপসে যেতে শুরু করবে। কিন্তু এটাই যে নক্ষত্রের জীবনকাহিনির সমাপ্তি নয়, তা-ও বুঝতে পারেন হয়েল।

গোটা নক্ষত্র ভেতরের দিকে চুপসে গেলে এর কেন্দ্র উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এতে বাইরের দিকে চাপ আবারও বাড়তে থাকে। ফলে নক্ষত্রটির চুপসে যাওয়া থেমে যায়। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে বেশ কয়েকটি বিষয় জড়িত। এর মধ্যে একটা হলো, সংকোচনে আরও নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকশন শুরু হয়, ফলে তাপ আরও বাড়তে থাকে।

হয়েলের গবেষণার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল হলো, কোনো নক্ষত্রের মৃত্যুতে নিউক্লীয়সিন্থেসিসপ্রক্রিয়া থেমে যায় না। প্রথম প্রজন্মের কোনো নক্ষত্রের অন্তর্বিস্ফোরণ ঘটলে বাইরের দিকে অতি শক্তিশালী শকওয়েভ বয়ে যায়।

এই বাড়তি তাপের কারণে কিছু ক্ষেত্রে নক্ষত্রটির স্থিতিশীলতা নতুন করে প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে তা সাময়িক। মুমূর্ষু নক্ষত্রটির মৃত্যুর সময়টাই প্রলম্বিত হয় কেবল। ক্রমেই নক্ষত্রটি বেশি জ্বালানি খরচ করতে থাকে। একসময় তার জ্বালানির জোগান চলে আসে সংকটপূর্ণ অবস্থায়। কম জ্বালানি মানে, কম শক্তি উত্পাদন। কাজেই নক্ষত্রটির কেন্দ্র আবারও শীতল হতে শুরু করে। এতে নক্ষত্রটি দ্বিতীয়বারের মতো সংকোচন বা চুপসানোর মুখে পড়ে। ফলে কেন্দ্রস্থল আবারও উত্তপ্ত হয় এবং চুপসানোর প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে থেমে যায়। তারপর একইভাবে আবারও জ্বালানির সংকটে পড়ে। এভাবে চুপসে যাওয়া থামা এবং আবারও শুরু কয়েকবার চলার পর একসময় নক্ষত্রটির মৃত্যুপ্রক্রিয়া দীর্ঘস্থায়ী হয়।

ছোট, বড়, মাঝারি, প্রথম প্রজন্ম, দ্বিতীয় প্রজন্ম—সব ধরনের নক্ষত্র বিশ্লেষণ করেন হয়েল। বেশ কয়েক বছর গবেষণার পর তিনি সফলভাবে বিভিন্ন নক্ষত্রের জীবনকালের শেষ পর্যায়ের তাপমাত্রা ও চাপের পরিবর্তন গণনা শেষ করতে সক্ষম হন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, মৃত্যুমুখী নক্ষত্রগুলোতে হুট করে বিস্ফোরণোন্মুখ নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া সম্পর্কেও বিশদ গণনা করেন তিনি। এভাবে হয়েল দেখান, বিভিন্ন আকৃতির নক্ষত্রে বিভিন্ন রকম চরম তাপমাত্রা ও চাপের সমন্বয়ে কীভাবে ভারী মৌলের নিউক্লিয়াস তৈরি হতে পারে।

দেখা গেল, একেক ধরনের নক্ষত্র বিভিন্ন ধরনের মৌল তৈরির জন্য চুল্লির কাজ করতে পারে। কারণ, নক্ষত্রের কেন্দ্রভাগ তার জীবন ও মৃত্যুর বিভিন্ন পর্যায়ে নাটকীয়ভাবে বদলে যায়। হয়েলের গণনা আমাদের পরিচিত ভারী মৌলগুলোর প্রাচুর্য সম্পর্কে সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারল। এতে ব্যাখ্যা পাওয়া গেল, অক্সিজেন ও লোহা সহজলভ্য কেন আর সোনা ও প্লাটিনামের পরিমাণ এত কম কেন।

অতি ভারী নক্ষত্রের ক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রমও দেখা যায়। চুপসে যাওয়ার পর্যায়ে এসব নক্ষত্রের পতন আর কোনোভাবে থামানো যায় না। নক্ষত্রটির দ্রুত মৃত্যু ঘটে। এটাও দেখার মতো ঘটনা। নাক্ষত্রিক এই মৃত্যুর সময় প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হয়, যাকে বলে সুপারনোভা বিস্ফোরণ। এতে যে পরিমাণ আলো বিকিরণ হয়, তা প্রায় ১০ বিলিয়ন সাধারণ নক্ষত্রের চেয়েও বেশি। হয়েল দেখান, সুপারনোভা বিস্ফোরণে সবচেয়ে চরম অবস্থার সৃষ্টি হয়। ফলে বিরল ধরনের নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া সংঘটিত হয়। এভাবেই তৈরি হয় ভারী ও বিরল মৌলগুলো।

হয়েলের গবেষণার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল হলো, কোনো নক্ষত্রের মৃত্যুতে নিউক্লীয়সিন্থেসিসপ্রক্রিয়া থেমে যায় না। প্রথম প্রজন্মের কোনো নক্ষত্রের অন্তর্বিস্ফোরণ ঘটলে বাইরের দিকে অতি শক্তিশালী শকওয়েভ বয়ে যায়। ফলে একটি বিস্ফোরণ ঘটে এবং নক্ষত্রের পরমাণুগুলো মহাবিশ্বের চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এগুলোর মধ্যে কিছু পরমাণুর জন্ম হয়েছে নক্ষত্রটির জীবনের শেষ পর্যায়ের নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার মাধ্যমে। এই নাক্ষত্রিক ধ্বংসাবশেষ মহাবিশ্বে ভাসমান অন্য যেকোনো কিছুর সঙ্গে মিশে যায়। ভাসমান এসব বস্তুর মধ্যে রয়েছে অন্যান্য মৃত নক্ষত্র থেকে আসা পরমাণু। সেগুলো একত্র হয়ে ঘনীভূত হয়ে সম্পূর্ণ নতুন কোনো নক্ষত্রের জন্ম হতে পারে। এটা দ্বিতীয় প্রজন্মের নক্ষত্র। এসব নক্ষত্র একটি দিক থেকে প্রথম প্রজন্মের নক্ষত্রের তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থায় থাকে। কারণ, নিউক্লীয়সিন্থেসিসের প্রেক্ষাপটে চিন্তা করলে দ্বিতীয় প্রজন্মের নক্ষত্রের জন্ম হয় কিছু ভারী মৌলের মাধ্যমে। মানে দ্বিতীয় প্রজন্মের নক্ষত্রেরা যখন মৃত্যুর সময় বিস্ফোরিত হয়, তখন তারা আগের চেয়ে আরও ভারী মৌল তৈরি করতে পারে। তাদের ধ্বংসাবশেষ মিলেমিশে জন্ম হয় তৃতীয় প্রজন্মের নক্ষত্র। বিজ্ঞানীদের ধারণা, আমাদের সূর্য তৃতীয় প্রজন্মের নক্ষত্র।

ফ্রেড হয়েল গণনা করে দেখলেন, বিভিন্ন নক্ষত্রে জীবনকালের বিভিন্ন পর্যায়ে নিউক্লীয়সিন্থেসিস কীভাবে সংঘটিত হতে পারে। নিচের টেবিলে (টেবিল ১) নির্দিষ্ট নক্ষত্রে নিউক্লীয়সিন্থেসিসের ধারাবাহিকতা দেখানো হয়েছে। এখানে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়াম, হিলিয়াম থেকে কার্বন এবং কার্বন থেকে অন্যান্য ভারী মৌল তৈরি হয়। টেবিলে দেখা যাচ্ছে, আমাদের সূর্যের চেয়ে মোটামুটি ২৫ গুণ ভারী নক্ষত্রে নিউক্লীয়সিন্থেসিস বিক্রিয়া ঘটতে পারে। সূর্যের মতো সাধারণ নক্ষত্রও কার্বন তৈরি করে। আর নিয়নসহ অন্যান্য মৌলের জন্য ৮ থেকে ১০ সৌরভরই যথেষ্ট। সাধারণ নক্ষত্রের তুলনায় এসব ভারী নক্ষত্রের জীবনকাল বেশ সংক্ষিপ্ত।

টেবিল ১: বিভিন্ন নক্ষত্রে জীবনকালের বিভিন্ন পর্যায়ে নিউক্লীয়সিন্থেসিসপ্রক্রিয়া

প্রাথমিকভাবে এসব নক্ষত্রে কয়েক কোটি বছর ধরে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়াম তৈরি হয়। নক্ষত্রটির জীবনকালের পরবর্তী পর্যায়ে তাপমাত্রা ও চাপ বেড়ে যায়। ফলে গঠিত হতে পারে অক্সিজেন, ম্যাগনেশিয়াম, সিলিকন লোহা এবং অন্যান্য ভারী মৌল। আর নক্ষত্রটির জীবনকালের একেবারে অন্তিম ও তীব্র পর্যায়ে আরও অনেক রকম ভারী মৌল তৈরি হয়। এভাবে কসমোলজির অন্যতম সেরা ধাঁধার মুখোমুখি হয়ে তার সমাধানেরও প্রায় দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেলেন হয়েল। কেবল বড় একটা সমস্যা রয়ে গেল।

টেবিলে ১-এ স্পষ্টভাবে দেখানো হয়েছে, হিলিয়াম থেকে কার্বন তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সেটা কীভাবে ঘটে, তা বের করতে পারেননি হয়েল। শুধু এটুকু বুঝতে পারলেন, হিলিয়াম থেকে কার্বন তৈরির কোনো কার্যকর পারমাণবিক বিক্রিয়ার পথ নেই। এটা একটা বড় সমস্যা। কিন্তু অনেক হিসাব করেও এর কোনো সমাধান পেলেন না তিনি।

এর আগে গ্যামোর দল দেখেছিল, হিলিয়ামের যেকোনো পারমাণবিক বিক্রিয়া থেকে অস্থিতিশীল নিউক্লিয়াস পাওয়া যায়। হিলিয়াম নিউক্লিয়াসের সঙ্গে একটা হাইড্রোজেন নিউক্লিয়াস যুক্ত করলে পাওয়া যায় লিথিয়াম-৫ নিউক্লিয়াস। কিন্তু সেটা খুবই অস্থিতিশীল। আবার দুটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস পরস্পর যুক্ত হলে পাওয়া যায় অস্থিতিশীল বেরিলিয়াম-৮ নিউক্লিয়াস।

হিলিয়াম থেকে ভারী মৌল, বিশেষ করে কার্বন তৈরি হওয়ার পথ এ দুটি। কিন্তু সব দেখে মনে হয়, প্রকৃতি কোনো কারণে হিলিয়াম থেকে ভারী মৌল তৈরি হওয়ার সব কটি পথ বন্ধ করে দিয়েছে। যেন গভীর কোনো ষড়যন্ত্র! এ দুটি বাধা সরানো না গেলে হয়েলের নক্ষত্রের কেন্দ্রে ভারী মৌল তৈরির সব ব্যাখ্যা তাসের ঘরের মতো ধসে পড়ে।

কিন্তু হয়েল ছিলেন সত্যিকারের লড়াকু মানুষ। মৃত্যুমুখী নক্ষত্রের মধ্যে তিনি যেসব জটিল পারমাণবিক বিক্রিয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, তার সবটুকুই নির্ভর করছিল কার্বন তৈরি হওয়ার ওপর। কাজেই সবার আগে কার্বন-রহস্যের সমাধানের জন্য মনপ্রাণ ঢেলে দিলেন হয়েল। কার্বন তৈরি হলো কীভাবে?

বেরিলিয়াম-৮ ভীষণ অস্থিতিশীল মৌল। এটি এতই অস্থিতিশীল যে তা সাধারণত এক সেকেন্ডের কোটি কোটি ভাগ সময়ের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভেঙে যায়।

কার্বনের সুপরিচিত রূপ কার্বন-১২। এর নিউক্লিয়াসে ১২টি কণা থাকে—৬টি প্রোটন ও ৬টি নিউট্রন। আর হিলিয়ামের সবচেয়ে পরিচিত রূপ হিলিয়াম-৪। এর নিউক্লিয়াসে চারটি কণা রয়েছে। এর মধ্যে প্রোটন দুটি ও নিউট্রন দুটি। তাই হয়েল সোজাসাপটা প্রশ্ন করলেন, তিনটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস থেকে একটা কার্বন পরমাণু তৈরি হওয়ার কোনো কার্যকর উপায় কি আছে?

একটা সম্ভাবনার কথা ভাবলেন হয়েল। সেটা হলো, তিনটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস একযোগে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে একটা কার্বন নিউক্লিয়াস গঠন করা। আইডিয়া হিসেবে পথটা দারুণ, কিন্তু বাস্তবে ঘটা অসম্ভব। কারণ, তিনটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস ঠিক এক জায়গায় একই সময়ে ও সঠিক গতিতে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাস্তবে প্রায় শূন্য। বিকল্প উপায় হতে পারে, দুটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস পরস্পর যুক্ত হয়ে একটা বেরিলিয়াম-৮ নিউক্লিয়াস গঠন করা, যার চারটি প্রোটন ও চারটি নিউট্রন থাকবে। এরপর এই বেরিলিয়াম-৮ নিউক্লিয়াস আরেকটা হিলিয়াম নিউক্লিয়াসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে হয়তো কার্বন তৈরি করবে।

আগেই বলেছি, বেরিলিয়াম-৮ ভীষণ অস্থিতিশীল মৌল। এটি এতই অস্থিতিশীল যে তা সাধারণত এক সেকেন্ডের কোটি কোটি ভাগ সময়ের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভেঙে যায়। এর অর্ধায়ু ৮.১৯×১০-১৭ সেকেন্ড। তবে এই ক্ষণস্থায়ী আয়ুর মধ্যেই হয়তো এটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কার্বন-১২ গঠিত হয়। অবশ্য সেটা ঘটলেও এখানে আরেকটা বাধা রয়েছে।

হিসাবে দেখা গেল, হিলিয়াম নিউক্লিয়াস আর বেরিলিয়াম নিউক্লিয়াসের ভরের যোগফল কার্বন নিউক্লিয়াসের ভরের চেয়ে কিছুটা বেশি। তাই হিলিয়াম আর বেরিলিয়াম একত্র হয়ে কার্বন গঠন করা সম্ভব হলেও এই অতিরিক্ত ভরের সমস্যাটার সমাধান করা জরুরি। সাধারণত পারমাণবিক বিক্রিয়ায় অতিরিক্ত ভর আইনস্টাইনের বিখ্যাত সূত্র E=mc2-এর মাধ্যমে শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। কিন্তু ভরের পার্থক্য যত বেশি হবে, ততই ওই বিক্রিয়া ঘটতে সময়ও বেশি লাগবে। অথচ বেরিলিয়াম-৮ নিউক্লিয়াস কোনোভাবেই অত সময় টিকে থাকতে পারবে না। কাজেই কার্বন গঠনের প্রক্রিয়া তাত্ক্ষণিকভাবে ঘটার কথা।

তার মানে হিলিয়াম থেকে বেরিলিয়াম-৮-এর পথ ধরে কার্বন গঠন পর্যন্ত দুটি বাধা দেখা যাচ্ছে। প্রথমত, বেরিলিয়াম-৮ অতি ক্ষণস্থায়ী। দ্বিতীয়ত, হিলিয়াম থেকে বেরিলিয়াম হয়ে কার্বনে যাওয়ার জন্য সময়টাও গুরুত্বপূর্ণ, না হলে ভরে কিছুটা ভারসাম্যহীনতা রয়ে যায়। গোটা পরিস্থিতি এককথায় অসম্ভব বলে মনে হচ্ছিল। এ রকম বাধার মুখে পড়ে স্রেফ হাল ছেড়ে দিতে পারতেন ফ্রেড হয়েল। আরও সহজ-সরল কোনো সমস্যার দিকে ঝুঁকতে পারতেন; কিন্তু তা না করে বিজ্ঞানের ইতিহাসে অন্যতম বড় লাফটা দিলেন তিনি।

যেকোনো পরমাণুর নিউক্লিয়াসের জন্য একটা আদর্শ কাঠামো থাকে। প্রোটন আর নিউট্রনের সজ্জা যে ভিন্ন কিছুও হতে পারে, তা জানতেন হয়েল। কার্বনের নিউক্লিয়াসে ১২টি কণা থাকে। কণাগুলো ১২টি গোলক হিসেবে আমরা ভাবতে পারি। গোলকগুলোকে সম্ভাব্য দুটি ভাগে সাজানো যায় (ওপরের ছবি)। প্রথমটিতে ছয়টি কণার দুটি আলাদা স্তর থাকবে, যেখানে কণাগুলো থাকবে আয়তাকার সজ্জায়। দ্বিতীয়টিতে চারটি স্তর থাকতে পারে, যেখানে প্রতিটি স্তরে থাকবে তিনটি কণার ত্রিভুজাকার সজ্জা। বোঝার সুবিধার জন্য এখানে অতি সরলীকরণ করা হচ্ছে। আসলে পারমাণবিক পর্যায়ে কণাগুলোর সজ্জা জ্যামিতিকভাবে এত সহজ-সরল হয় না।

ধরা যাক, প্রথম সজ্জাটা পরিচিত সাধারণ কার্বনের রূপ আর দ্বিতীয়টা উত্তেজিত কার্বনের। সাধারণ কার্বনকেও উত্তেজিত কার্বনে রূপান্তর করা সম্ভব। সে জন্য সাধারণ কার্বনে শক্তি ঢুকিয়ে দিতে হবে। আইনস্টাইনের সূত্র অনুযায়ী, ভর ও শক্তি সমতুল্য। কাজেই উত্তেজিত কার্বন নিউক্লিয়াসের ভর সাধারণ কার্বনের ভর থেকে কিছুটা বেশি হবে। এভাবে হয়েল সিদ্ধান্তে এলেন, প্রকৃতিতে অবশ্যই কার্বন-১২-এর উত্তেজিত রূপের অস্তিত্বও আছে। তাঁর অনুমান সঠিক হলে সেই কার্বনের ভর হবে হিলিয়াম-৪ এবং বেরিলিয়াম-৮-এর ভরের যোগফলের একদম সমান। এ রকম কার্বন নিউক্লিয়াসের অস্তিত্ব যদি পাওয়া যায়, তাহলে হিলিয়াম-৪ নিউক্লিয়াস অতি দ্রুত বেরিলিয়াম-৮-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে কার্বন-১২ গঠন করবে। বেরিলিয়াম-৮-এর জীবনকাল অতি সংক্ষিপ্ত হলেও এভাবে পর্যাপ্ত কার্বন-১২ তৈরি হওয়া সম্ভব।

ব্যস, এটাই রহস্যের সমাধান। কিন্তু প্রমাণ কই?

হয়েল যে যুক্তি দিয়েছিলেন, সেটাই পরে পরিচিতি পায় অ্যানথ্রোপিক প্রিন্সিপল নামে। যুক্তিটা হলো, তিনি নিজে ও অন্যান্য মানুষ কার্বন-১২ নিউক্লিয়াস দিয়ে তৈরি।

বিজ্ঞানীরা শুধু কল্পনায় কোনো সমস্যার সমাধান করে বসে থাকেন না। তার জন্য প্রমাণ চাই হাতে-কলমে। প্রমাণ পেলেই কেবল হয়েলের কথা সঠিক বলে মেনে নেবেন অন্য বিজ্ঞানীরা।

হয়েল আরেক দফা হিসাব কষলেন। উত্তেজিত কার্বনের শক্তি কত হবে, সেটা জানতে চান। তিনি দেখলেন, তাঁর প্রস্তাবিত উত্তেজিত কার্বনের শক্তি সাধারণ কার্বনের তুলনায় ৭.৬৫ মেগাইলেকট্রনভোল্ট বেশি হবে। এবার জানা দরকার, এই উত্তেজিত দশার অস্তিত্ব আসলেই আছে কি না। একটা উপায়ে সেটা করা যেতে পারে বলে মনে হলো হয়েলের। সেটা সঠিক কি না, তা জানতে তিনি ছুটলেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা ক্যালটেকে। সেখানে ছিল কেলগ রেডিয়েশন ল্যাবরেটরি। কাজ করতেন উইলিয়াম ফাউলার। বিশ্বের অন্যতম সেরা পরীক্ষামূলক নিউক্লিয়ার পদার্থবিদ হিসেবে নাম কামিয়েছেন তিনি। হয়েল ভাবলেন, তাঁকে বলতে হবে।

একদিন ফাউলারের অফিসে ঘুরতে এলেন হয়েল। উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছিলেন। তাঁকে উত্তেজিত কার্বনের কথা খুলে বললেন। তাঁর কথা শুনে স্বভাবতই বেশ উত্তেজিত হলেন ফাউলার। কারণ, হয়েলের অনুমানের ভিত্তি ছিল খাঁটি যুক্তি, গণিত বা পদার্থবিজ্ঞান নয়। হয়েল দাবি করলেন, ফাউলার যাতে এই কার্বন খুঁজে তাঁর অনুমান সঠিক বলে প্রমাণ করেন।

হয়েল যে যুক্তি দিয়েছিলেন, সেটাই পরে পরিচিতি পায় অ্যানথ্রোপিক প্রিন্সিপল নামে। যুক্তিটা হলো, তিনি নিজে ও অন্যান্য মানুষ কার্বন-১২ নিউক্লিয়াস দিয়ে তৈরি। কিন্তু উত্তেজিত অবস্থায় কার্বনের অস্তিত্ব না থাকলে এই মহাবিশ্বে কোনো মানুষ বা জীবজন্তুর অস্তিত্ব থাকত না। তাহলে কেউ এ রকম প্রশ্ন তুলতেও পারতেন না।

ওটাই ছিল হয়েলের সঙ্গে ফাউলারের প্রথম সাক্ষাৎ। তাই হয়েলের আবদারে পাত্তা দিলেন না তিনি। বরং তাঁকে নিরস্ত করতে জানালেন, কার্বন-১২ ইতিমধ্যেই বিশদভাবে পরিমাপ করা হয়েছে, সেখানে কোনো উত্তেজিত দশার কার্বন পাওয়া যায়নি। কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্র নন হয়েল। কাজটা করার জন্য বারবার ফাউলারকে চাপ দিতে লাগলেন। তাঁর যুক্তি, মাত্র অল্প কয়েক দিন সময় ব্যয় করে কাজটা সহজেই যাচাই করা সম্ভব। অবশ্য হয়েলের যদি ভুল হয়ে থাকে, তাহলে ফাউলারের পুরো পরিশ্রম জলে যাবে। কিন্তু হয়েল যদি সঠিক হন, তাহলে নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞানে অন্যতম বড় একটা আবিষ্কারের জন্য পুরস্কৃত হবেন তিনি। সব ভেবে ঝুঁকিটা নিলেন ফাউলার। তাঁর দলকে দ্রুত কার্বনের উত্তেজিত দশা খোঁজার নির্দেশ দিলেন।

১০ দিন ব্যয় করে কার্বন নিউক্লিয়াস বিশ্লেষণ করল ফাউলারের দল। মজার ব্যাপার হলো, কার্বনের ওই দশাটা পাওয়া তো গেলই, তার শক্তিও পাওয়া গেল সাধারণ কার্বনের চেয়ে ৭.৬৫ মেগা ইলেকট্রন ভোল্ট বেশি। ঠিক যেটা অনুমান করেছিলেন হয়েল।

এভাবে হয়েল প্রমাণ করলেন, হিলিয়াম বেরিলিয়ামে রূপান্তরিত হয়ে তারপর কার্বন গঠিত হয়। তাঁর হিসাবে, কার্বন তৈরির জন্য মোটামুটি ২০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা লাগে। এটা বেশ ধীর প্রক্রিয়া। তবে কোটি কোটি নক্ষত্র কোটি কোটি বছর ধরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কার্বন তৈরি করতে পারে। পর্যাপ্ত কার্বন তৈরি হওয়ার পর মহাবিশ্বে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় অন্য ভারী মৌলগুলো তৈরি হতে আর কোনো বাধা রইল না। এভাবে হয়েল নাটকীয়ভাবে প্রমাণ করলেন, নিউক্লীয়সিন্থেসিস আসলে মহাবিস্ফোরণের সময় নয়, বরং নক্ষত্রের ভেতর ঘটেছে। এমনকি সে জন্য একটা বড় ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রামও তৈরি করেন হয়েল। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রায় প্রথম নীতি থেকে প্রকৃতিতে মৌলগুলোর আপেক্ষিক প্রাচুর্য নির্ধারণ করা যেত।

এ বিষয়ে হয়েল, উইলিয়াম ফাউলার এবং একই সঙ্গে পদার্থবিদ দম্পতি মার্গারেট, জিওফ্রি বারবিজ ১৯৫৭ সালে গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। ১০৪ পৃষ্ঠার সেই পেপারের শিরোনাম: ‘সিন্থেসিস অব দ্য এলিমেন্টস অব স্টারস’। গবেষণাপত্রটি বি স্কয়ার এফএইচ পেপার (B2FH) নামে বেশি পরিচিত। লেখকদের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে গঠিত এ নাম। বিশ শতকের বিজ্ঞানে এটা অন্যতম সেরা সাফল্য হিসেবে বিবেচিত। মহাবিশ্বের মৌলগুলোর উত্পত্তির জন্য প্রয়োজনীয় ধাপের নিখুঁত বর্ণনা এবং তাদের প্রাচুর্যের অনুমানসংক্রান্ত বিষয়ে একে সম্ভবত চূড়ান্ত কাজ বলা যায়। তাঁদের যুক্তি এতই নিখুঁত, শক্তিশালী ও বোধগম্য ছিল যে শেষ পর্যন্ত গ্যামোও তা মানতে বাধ্য হন। তিনি স্বীকার করেন, নিউক্লীয়সিন্থেসিস সম্পর্কে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য চিত্র তুলে ধরেছেন হয়েল।

এখানেই শেষ নয়, এর মাধ্যমে বিগ ব্যাং মডেলকে নস্যাৎ করতে চেয়েছিলেন হয়েল। কিন্তু প্রকারান্তরে অন্যতম বড় একটি প্রমাণের জোগান দিলেন বিগ ব্যাং মডেলকে। ফ্রেড হয়েলের এই গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছাড়া বিগ ব্যাং মডেলের বিজয় সম্ভব ছিল না।

১৯৮৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয় কসমোলজির ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ এই গবেষণাপত্রের জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যের ব্যাপার হলো, নোবেল পেলেন শুধু ফাউলার, হয়েল নন। নোবেলের বঞ্চনার ইতিহাসে আরও অনেকের মতো এভাবেই জায়গা পেয়েছেন ডাকসাইটে বিজ্ঞানী ফ্রেড হয়েল।

সূত্র: Marcus Chown, Afterglow of Creation, Faber & Faber, UK (2010)

Paul Halpern, Flashes of Creation: George Gamow, Fred Hoyle, and the Great Big Bang Debate, Basic Books (2021)

Priamvada Natarajan, Mapping the Heavens, HarperCollins Publishers, India, 2016

Simon Mitton, Fred Hoyle : A Life in Science, University of Cambridge, 2011

Simon Singh, Big Bang: The Origin of the Universe, HarperCollins Publishers, London, 2005

মিচিও কাকু, ভাষান্তর: আবুল বাসার, প্যারালাল ওয়ার্ল্ডস, প্রথমা প্রকাশন, ঢাকা, ২০২১

আবুল বাসার, মহাজাগতিক প্রথম আলো, প্রথমা প্রকাশন, ঢাকা, ২০২২

*লেখাটি ২০২২ সালে বিজ্ঞানচিন্তা অক্টোবর সংখ্যায় প্রকাশিত