জান্নাত ও জামিয়া দুই বন্ধু। দুজনের গলায়–গলায় ভাব। সময়ে–অসময়ে একে অপরের বাড়িতে যাওয়া-আসা করে। আগামী সপ্তাহে তাদের স্কুলে আয়োজিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে অংশগ্রহণ করবে তারা দুজন। দুই বন্ধু গান পরিবেশন করবে। জান্নাতের গানের গলা দারুণ। কিন্তু জামিয়ার কিছুটা দুর্বলতা আছে। জামিয়া গানের তালিম নিতে জান্নাতের বাসায় এসেছে। জামিয়া দেখল, জান্নাতদের বাসার সামনে পাঁচ জোড়া জুতা রাখা আছে। স্যান্ডেল, অফিস জুতা, লোফার ও দুই জোড়া কেডস।
জান্নাতের পরিবারে আছেন মা, বাবা, বোন ফাতেমা এবং দুই ভাই সুহাইব ও সাফওয়ান। তাঁরা প্রত্যেকে এখন ঘরে আছেন। তবে কে কোথায় আছেন, সেটা নিচের তথ্যে দেওয়া থাকবে। বাসায় তাঁরা প্রত্যেকে কোনো না কোনো কাজ করছেন। কে কী কাজ করছেন, সেটাও দেওয়া থাকবে তথ্যে। আপনাকে শুধু খুঁজে বের করতে হবে, দরজার বাইরে রাখা পাঁচ জোড়া জুতার মধ্যে কোনটি কার, তাঁরা কে কী করছিলেন এবং কে কোথায় আছেন। এ প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়া যাবে নিচের ১০টি তথ্যে। চলুন, প্রথমে তথ্যগুলো জেনে নেওয়া যাক।
১. বাবা একা রান্নাঘরে আছেন।
২. ফাতেমা একটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন। তাই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
৩. সাফওয়ান দুই ফিতাযুক্ত স্যান্ডেল পরতে পছন্দ করেন।
৪. একজন টেলিভিশনে খবর দেখছেন এবং রাতের খাবার তৈরি করছেন।
৫. যিনি সংবাদপত্র পড়ছেন, তিনি কেডস পরেন না।
৬. বাবা সরকারি চাকরিজীবী। অফিসে যাওয়ার সময় প্রতিদিন সুন্দর জামা, প্যান্ট ও জুতা পরে যান।
৭. মা ফুলের দেখভাল করছেন।
৮. বসার ঘরে তিনজন মানুষ আছেন।
৯. সুহাইব একটি বই নিয়ে পড়ার ঘরে বসে পড়ছেন।
১০. মা ও বোন এক ঘণ্টা আগে জগিং করে ফিরেছেন।
প্রশ্ন হলো—কে ছবি আঁকেন?
ধাঁধাটা সমাধান করা আসলে খুব কঠিন নয়। একসঙ্গে অনেকগুলো তথ্য পড়ে একটু জটিল মনে হয়, এ–ই যা। কাজটা সহজ করার জন্য আপনি চাইলে ওপরের ছকের মতো একটি ছক বানিয়ে নিতে পারেন।
সমাধান:
এবার চলুন, ওপরের তথ্যগুলো যাচাই করে উত্তর খুঁজি।
প্রথম শর্তে বলা হয়েছে, বাবা একা রান্নাঘরে আছেন। আবার ৪ নম্বর শর্তে বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি রাতের খাবার তৈরি করছেন এবং টেলিভিশনে খবর দেখছেন। তাহলে কে রান্না করছেন? যিনি রান্নাঘরে আছেন, তিনি নিশ্চয়ই। অর্থাৎ রান্না করছেন বাবা। এবার ৬ নম্বর শর্ত খেয়াল করুন। বাবা সরকারি চাকরিজীবী। তিনি সুন্দর জামা, প্যান্ট ও জুতা পরে নিয়মিত অফিসে যান। তাহলে তিনি নিশ্চয়ই অফিসের জুতা পরেন। তার মানে বাবা কোথায় আছেন, কী করছেন এবং কোন জুতাটি তাঁর, তা আমরা জানলাম। একটি ছকে এগুলো বসিয়ে নিই। নতুন পাওয়া তথ্যগুলো সবুজ করে রাখব। তাতে সহজে বোঝা যাবে, কোন তথ্যগুলো আমরা নতুন পেলাম।
এবার ৮ নম্বর শর্ত দেখুন, তিন ব্যক্তি বসার ঘরে আছেন। এখানে মোট মানুষ পাঁচজন। বাবা আছেন রান্নাঘরে। ৯ নম্বর শর্তে বলা হয়েছে, সুহাইব আছেন পড়ার ঘরে। অর্থাৎ বাকি তিনজন নিশ্চয়ই আছেন বসার ঘরে। এবার ৭ নম্বর তথ্য দেখুন। মা ফুলের দেখাশোনা করছেন। এরপর দেখুন ১০ নম্বর তথ্য। মা ও বোন জগিং করে এসেছেন। জগিং করতে নিশ্চয়ই তাঁরা কেডস পরে গিয়েছিলেন। সাধারণত মানুষ কেডস পরে জগিংয়ে যায়। সে হিসেবে আমরা এ তথ্য ধরে নেব। এ ধরনের ধাঁধার ক্ষেত্রে একটু বাড়িয়ে চিন্তা না করলে সমাধান বের করা মুশকিল। যাহোক, তাহলে আমরা মা ও বোনের জুতা সম্পর্কে জানলাম। এবার নতুন পাওয়া তথ্যগুলো টেবিলে বসানো যাক।
এবার ৩ নম্বর শর্তে দেখুন, সাফওয়ান দুই ফিতাযুক্ত স্যান্ডেল পরেন। অর্থাৎ তিনি স্যান্ডেল পরেন। তাহলে বাকি রইল আর এক জোড়া জুতা। মানুষও বাকি একজন। অর্থাৎ সুহাইব পরেন লোফার জুতা। আর ফাঁকা ঘর রইল দুটি। সাফওয়ান ও ফাতেমা কী করছেন?
আমরা ৫ নম্বর শর্তে দেখেছি, একজন পড়েন সংবাদপত্র কিন্তু তিনি কেডস পরেন না। যেহেতু ফাতেমা কেডস পরেন, সেহেতু তিনি সংবাদপত্র পড়তে পারেন না। তাহলে নিশ্চয়ই সংবাদপত্র পড়ছেন সাফওয়ান। বাকি রইল, কে ছবি আঁকেন। নিশ্চয়ই ধরে ফেলেছেন, ফাতেমা ছবি আঁকছিলেন। কারণ, ফাতেমা ছাড়া পরিবারের বাকি সবাই কিছু না কিছু করছিলেন। আসলে ফাতেমা ছবি আঁকা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন। তারই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সুতরাং ছবি আঁকছিলেন ফাতেমা।
লেখক: সম্পাদনা দলের সদস্য, বিজ্ঞানচিন্তা
বুদ্ধির ব্যায়ামের পাঁচ বিজয়ী
১. সুরাইয়া আলম, পুরাতন হাসপাতাল রোড, পটুয়াখালী
২. তানভীর আজাদ, কাটলী, নেত্রকোনা
৩. শোভন দেব, চকবাজার, চট্টগ্রাম
৪. মো. রিফাত সময়, বোয়ালিয়া, রাজশাহী
৫. চঞ্চল, দেবিদ্বার, কুমিল্লা