৯ দিয়ে গুণের কৌশল

গণনা কিংবা অঙ্ক কষতে গিয়ে মাঝে মধ্যে আমাদের ৯ দিয়ে গুণ করতে হয়। খাতা-কলমে আমরা সে গুণ অনায়াসে করতে পারি। কিন্তু ৯ দিয়ে মনে মনেও এ গুণ করা যায়। কৌশলে এ পদ্ধতিতে গুণ করতে হলে একটুখানি বিয়োগ করতে হবে। তবে গুণের চেয়ে বেশির ভাগ মানুষের কাছেই সম্ভবত বিয়োগটা সহজ।

প্রথমে যে সংখ্যাকে ৯ দিয়ে গুণ করতে চাই, সে সংখ্যাটাকে গুণ দিতে হবে ১০ দিয়ে। আর ১০ দিয়ে গুণ করা তো পানির মতো সহজ। শুধু ডানে একটা শূন্য বসানো আরকি। এরপর শুধু ওই গুণফল থেকে ৯ বিয়োগ করলেই কাজ শেষ। একটু ধাপে ধাপে দেখি, তাহলে সহজে বোঝা যাবে।

সমস্যা: ১ (সহজ)

১৪ × ৯

ধাপ ১: প্রথমে ১৪-কে গুণ করতে হবে ১০ দিয়ে। অর্থাৎ ১৪ × ১০ = ১৪০।

ধাপ ২: গুণফল ১৪০ থেকে বিয়োগ করতে হবে ১৪। অর্থাৎ ১৪০ - ১৪ = ১২৬। এ বিয়োগটাও কৌশলে করা যায়। প্রথমে ১৪০ থেকে ১০ বিয়োগ করে পাব ১৩০। এখন ১৩০ থেকে ৪ বিয়োগ করা মানে মোট ১৪ বিয়োগ করা হলো। আর ১৩০ থেকে ৪ বিয়োগ করলে পাব ১২৬। এটাই উত্তর। 

একনজরে দেখে নিই

১৪ × ৯ ⇢ ১৪ × ১০ = ১৪০ ⇢ ১৪০ - ১৪ = ১২৬

আরও পড়ুন

সমস্যা: ২ (সহজ)

২৬ × ৯

ধাপ ১: প্রথমে ২৬-কে ১০ দিয়ে গুণ করলে হবে ২৬ × ১০ = ২৬০।

ধাপ ২: গুণফল ২৬০ থেকে ২৬ বিয়োগ করলে পাব ২৬০ - ২৬ = ২৩৪। এখানে ২৬০ থেকে প্রথমে ২০ বিয়োগ করতে হবে। তারপর ৬ বিয়োগ করলেই হবে ২৩৪। আর প্রথমে ২০ ও পরে ৬, মানে মোট ২৬ বিয়োগ করাও হলো।

একনজরে দেখে নিই

২৬ × ৯ ⇢ ২৬ × ১০ = ২৬০ ⇢ ২৬০ - ২৬ = ২৩৪

আরও পড়ুন

সমস্যা: ৩ (কঠিন)

৪৫০ × ০.৯

ধাপ ১: শুরুতে ধরে নিই, ওপরের গুণটিতে দশমিক বা সংখ্যার শেষে শূন্য নেই। তাহলে গুণটা দাঁড়াবে ৪৫ × ৯।  

ধাপ ২: এবার ৪৫-কে ১০ দিয়ে গুণ করতে হবে। ৪৫ × ১০ = ৪৫০।

ধাপ ৩: গুণফল ৪৫০ থেকে বিয়োগ করতে হবে ৪৫। বিয়োগটা খুব সহজ। উত্তর হবে ৪৫০ - ৪৫ = ৪০৫।

ধাপ ৪: প্রথম ধাপে একটা শূন্য ও একটা দশমিক বাদ দিয়েছিলাম। একটা শূন্য বাদ দেওয়ার কারণে উত্তরের পাশে একটা শূন্য বসবে। অর্থাৎ উত্তর হবে ৪০৫০। আবার একটা দশমিকও বাদ দিয়েছিলাম। তাই উত্তরের ডান থেকে এক ঘর বাঁয়ে একটা দশমিক বসবে। অর্থাৎ ৪০৫.০। মানে উত্তর যা ছিল তা-ই হবে—৪০৫।

 

একনজরে দেখে নিই

৪৫০ × ০.৯ ⇢ ৪৫ × ৯ ⇢ ৪৫ × ১০ = ৪৫০ ⇢ ৪৫০ - ৪৫ = ৪০৫

আরও পড়ুন

সমস্যা: ৪ (কঠিন)

৭.৫ × ৯০০

ধাপ ১: এখানেও ধরে নিই, ওপরের গুণে শূন্য ও দশমিক নেই। তাহলে গুণটা হলো ৭৫ × ৯।  

ধাপ ২: ৭৫-কে ১০ দিয়ে গুণ করলে হবে ৭৫ × ১০ = ৭৫০।

ধাপ ৩: এখন ৭৫০ - ৭৫ = ৬৭৫।

ধাপ ৪: প্রথম ধাপে একটা দশমিক ও দুটি শূন্য বাদ দিয়েছিলাম। তাহলে উত্তরের সঙ্গে আরও একটা শূন্য বসবে। কারণ ‘সমস্যা ৩’-এর মতো একটা দশমিক ও একটা শূন্য কাটাকাটি যাবে। তাহলে রইল বাকি আরেকটা শূন্য। সেটা উত্তরের পাশে বসালে হবে ৬৭৫০। এটাই উত্তর।

আরেকটু বুঝিয়ে বলি। প্রথম দুটি শূন্য বাদ দেওয়ার কারণে উত্তরের সঙ্গে দুটি শূন্য যোগ হওয়ার কথা। তাহলে উত্তর হবে ৬৭,৫০০। আবার এক ঘর আগের দশমিক বাদ দেওয়ার কারণে উত্তরের এক ঘর ডান থেকে বাঁয়ে দশমিক বসবে। তাহলে উত্তর হবে ৬৭৫০.০ বা ৬,৭৫০।

একনজরে দেখে নিই

৭.৫ × ৯০০ ⇢ ৭৫ × ৯ ⇢ ৭৫ × ১০ = ৭৫০ ⇢ ৭৫০ - ৭৫ = ৬৭৫ ⇢ ৬,৭৫০।

যেভাবে মনে মনে করবেন

এবার এককথায় পুরোটা বলি। যখনই দেখা যাবে ৯ দিয়ে গুণ; সঙ্গে সঙ্গে যে সংখ্যার গুণ, তার পাশে একটা শূন্য বসিয়ে ওই অঙ্কটা বিয়োগ করলেই হবে। মাত্র ৫ সেকেন্ডের কাজ। যেমন ২৯-কে ৯ দিয়ে গুণ করতে হলে আমার মাথায় আসে ২৯০ - ৯ = ২৮১। হয়ে গেল গুণ।

অনুশীলন (সহজ)

১. ৯ × ১২ =

২. ৭৭ × ৯ =

৩. ৯ × ৫৬ =

৪. ২৮ × ৯ =

৫. ৯ × ৬৭ =

অনুশীলন (কঠিন)

১. ৯৫ × ৯ =

২. ২৭০ × ৯ =

৩. ৯০ × ৩৬০ =

৪. ০.০৯ × ৬৯০ =

৫. ০.৪৭ × ৯০০ =

সমাধান (সহজ)

১. ১০৮; ২. ৬৯৩; ৩.৫০৪; ৪. ২৫২; ৫. ৬০৩

সমাধান (কঠিন)

১. ৮৫৫; ২.২,৪৩০; ৩. ৩২,৪০০; ৪. ৬২.১; ৫. ৪২৩