নতুন জানলাম

প্রতিদিন বিজ্ঞানের জগতে ঘটছে নানা ঘটনা। প্রতিমুহূর্তে এগোচ্ছে পৃথিবী, বদলে যাচ্ছে অনেক কিছু। প্রকাশিত হচ্ছে নতুন গবেষণাপত্র, জানা যাচ্ছে নতুন গবেষণার কথা। কিছু বিষয় এত সুদূর প্রসারী যে এগুলোর প্রভাব বোঝা যাবে আরও অনেক পরে। এরকম নানা বিষয়, নানা ঘটনা দেখে নিন একনজরে, জেনে নিন সংক্ষেপে।

১. খোঁজ মিলেছে সবচেয়ে ভারী অ্যান্টিম্যাটারের  

বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ভারি অ্যান্টিম্যাটার বা প্রতিপদার্থ নিউক্লিয়াস আবিষ্কার করেছেন। এর নাম দেওয়া হয়েছে অ্যান্টিহাইপারহাইড্রোজেন-৪। একটি অ্যান্টিপ্রোটন, দুটি অ্যান্টিনিউট্রন এবং একটি অ্যান্টিহাইপারের (স্ট্রেঞ্জ কোয়ার্ক দিয়ে গঠিত একধরনের ব্যারিয়ন কণা) সমন্বয়ে তৈরি এই প্রতিপদার্থ। বিজ্ঞান জার্নাল নেচার-এ চলতি বছরের ২১ আগস্ট এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ব্রুকহেভেন ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির পদার্থবিদরা রিলেটিভিস্টিক হেভি আয়ন কলাইডারে (RHIC) ৬ বিলিয়ন বা ৬০০ কোটি সংঘর্ষের ফলে উৎপন্ন কণা ট্র্যাক করে এই অ্যান্টিম্যাটারের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন।পদার্থবিজ্ঞানীরা বর্তমানে এই অদ্ভুত কণা নিয়ে গবেষণা করছেন।তাঁদের আশা, পদার্থ এবং প্রতিপদার্থের মধ্যে এমন কিছু মৌলিক পার্থক্য খুঁজে পাবেন, যা মূলত একটা প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিতে পারবে।প্রশ্নটা হলো, মহাবিশ্বের সূচনালগ্নে পদার্থ ও প্রতিপদার্থ একই পরিমাণে তৈরি হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে মহাবিশ্বে কেন মূলত পদার্থই রয়ে গেল? প্রতিপদার্থগুলো সব গেল কোথায়? বিজ্ঞানীদের আশা, শুধু এ প্রশ্নের উত্তরই না, আরও অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে।

২. পৃথিবীর ম্যান্টলে গভীরতম গর্ত খনন

উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝে, সমুদ্রের নিচে ভূতাত্ত্বিকেরা ১ হাজার ২৬৮ মিটার গভীর গর্ত খুঁড়েছেন। এটি এখন পর্যন্ত পৃথিবীর ম্যান্টলে ড্রিল বা খনন করা গভীরতম গর্ত। এ গর্তে যে নমুনা পাওয়া গেছে, তার প্রায় ৭১ শতাংশ উদ্ধার করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের আশা, এই স্তরের নমুনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে পৃথিবীর বাইরের স্তরগুলোর বিবর্তন ও জীবনের উৎপত্তি সম্পর্কে আরও জানতে পারবেন।

এ গবেষণায় কাজ করেছেন যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ভূতত্ত্ববিদ। এ খনন কাজের জন্য তাঁরা ড্রিলিং জাহাজ জয়েডস রেজ্যুলুশন (JOIDES Resolution) ব্যবহার করেন। খননকাজ চলে প্রায় দুই মাস। খনন করা নমুনা বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ম্যান্টল থেকে সংগৃহীত নমুনার তুলনায় এ অঞ্চলে পাইরোক্সিন নামে খনিজের মাত্রা অনেক কম। এ থেকে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ম্যান্টলের এই নির্দিষ্ট অংশটি অতীতে প্রচুর গলনের মধ্য দিয়ে গেছে। অনেক বিজ্ঞানীর ধারণা, পৃথিবীতে প্রাণের সূচনা হয়েছে সমুদ্রের গভীরে, এরকমই কোনো হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট বা জলতাপীয় ফাটলের কাছাকাছি। গত ৮ আগস্ট সায়েন্স জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুন

৩. মঙ্গলে পাওয়া গেছে বিশাল সমুদ্র

মঙ্গলে জীবন আছে কি না, সেই রহস্য উন্মোচনের চেষ্টায় বিজ্ঞানীরা বছরের পর বছর কাজ করে যাচ্ছেন। আর এর সন্ধানে আরও এক ধাপ এগিয়েছেন তাঁরা সম্প্রতি। এই কিছুদিন আগে মঙ্গলপৃষ্ঠের নিচে বিশাল এক সমুদ্র আবিষ্কার করেছেন তাঁরা। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এই সমুদ্রের গভীরে থাকতে পারে প্রাণের অস্তিত্ব। এ সম্পর্কিত গবেষণাপত্র গত ১২ আগস্ট প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস (পিএনএএস) জার্নালে প্রকাশিত হয়।

এটি ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে ও সান ডিয়েগোর বিজ্ঞানীদের যৌথ গবেষণার ফসল। তাঁরা এই গবেষণার জন্য মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ইনসাইট ল্যান্ডারের সংগৃহীত সিসমিক ডেটা থেকে মঙ্গল গ্রহের ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি ও উল্কার প্রভাবের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই গভীর জলাশয়ের অস্তিত্বের প্রমাণ পেয়েছেন। সাধারণত অ্যাকুইফার বা পানিযুক্ত ভূগর্ভস্থ শিলাস্তর ও তেলের মজুত খুঁজতে ব্যবহৃত হয়, এমন একটি গাণিতিক মডেল ব্যবহৃত হয়েছে এ ক্ষেত্রে। এভাবে মঙ্গলের গভীর জলাশয়ের অস্তিত্ব নিশ্চিত করেছেন তাঁরা। গবেষকেরা মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১১.৫ থেকে ২০ কিলোমিটার নিচে পানি আছে বলে ধারণা করছেন। এতে এত বিপুল পরিমাণ পানি আছে যে গ্রহটির পুরোটাজুড়ে এই পানি ছড়িয়ে পড়লেও এর উচ্চতা হবে প্রায় ১ মাইল বা প্রায় দেড় কিলোমিটারের সমান। তবে এই সমুদ্র মাটির এত গভীরে যে জানা কোনো পদ্ধতি বা প্রযুক্তির মাধ্যমে এতে পৌঁছানো বর্তমানে সম্ভব নয়। এ জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু বছর।

আরও পড়ুন

৪. নাসার গ্রহাণু শনাক্তকারী টেলিস্কোপের কাজ শেষ মহাকাশে

নিওওয়াইজ (NEOWISE) টেলিস্কোপকে গ্রহাণু এবং ধূমকেতু পর্যবেক্ষণের জন্য মহাকাশে পাঠানো হয় ২০০৯ সালে। বিশেষ করে যেসব গ্রহাণু বা ধূমকেতু পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে, সেগুলো শনাক্ত ও পর্যবেক্ষণের জন্য। নিওওয়াইজ মানে নিয়ার আর্থ অবজেক্ট ওয়াইড-ফিল্ড ইনফ্রারেড সার্ভে এক্সপ্লোরার। দীর্ঘ ১৫ বছর এটি নিরবচ্ছিন্ন ভাবে কাজ করে আসছে। তবে গত ৮ আগস্ট নিওওয়াইজ এজেন্সির ইঞ্জিনিয়াররা এর ট্রান্সমিটার বন্ধ করে দেওয়ার জন্য শেষ কমান্ড পাঠিয়েছেন। অর্থাৎ এখন এই টেলিস্কোপ অকেজো হয়ে ঘুরছে পৃথিবীর নিম্ন অরবিট বা কক্ষপথে।

নাসার তথ্য মতে, এটি পৃথিবীর কাছাকাছি ৩ হাজারের বেশি মহাজাগতিক বস্তু আবিষ্কার করেছে। এর মধ্যে ২১৫টি আগে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের অজানা ছিল। পাশাপাশি আবিষ্কার করেছে ২৫টি ধূমকেতু। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নিওওয়াইজ ধূমকেতু। ২০২০ সালে এই ধূমকেতু দেখা গিয়েছিল। তবে সৌর বিকিরণ এবং আরও কিছু কারণে এটি বর্তমানে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। নাসা জানিয়েছে, নিওওয়াইজ টেলিস্কোপটিকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করিয়ে ধ্বংস করা হবে। এরপর ২০২৭ সালে আরও শক্তিশালী ‘নিও সার্ভেয়ার’ নামে একটি নতুন টেলিস্কোপ পাঠানো হবে মহাকাশে।

৫. মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে যোগাযোগ হবে আরও দ্রুত

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া অঙ্গরাজ্যে একটি নতুন লেজার চালিত প্রকল্প শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের সাহায্যে বিশ্ব যোগাযোগে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে গবেষকদের আশা। তাঁরা জানিয়েছেন, এ প্রকল্পের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। জার্মানির একটি কৃত্রিম উপগ্রহ রয়েছে মহাকাশে, সেটি থেকে পাওয়া লেজার সংকেত সফলভাবে গ্রহণ করতে পেরেছে গ্রাউন্ড স্টেশন। ফলে স্পেস-টু-আর্থ, অর্থাৎ মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে যোগাযোগ সম্পন্ন হয়েছে আগের চেয়ে প্রায় এক হাজার গুণ দ্রুত। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘টেরানেট’। এই প্রকল্পের নেতৃত্বে ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার (ডব্লিউএ) অ্যাস্ট্রোফোটোনিকস বিভাগের বিজ্ঞানী সাশা শেডিউই। আর প্রকল্পটি অর্থায়ন করেছে অস্ট্রেলিয়ান স্পেস এজেন্সির মুন টু মার্স ডেমোনস্ট্রেটর মিশন।

১৯৫৭ সালে স্পুটনিক-১ উৎক্ষেপণের পর থেকেই স্যাটেলাইটগুলো রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে পৃথিবীতে যোগাযোগ করে আসছে।কিন্তু এই রেডিও তরঙ্গের ফ্রিকোয়েন্সি কম হওয়ায় এগুলোর ডেটা বা তথ্য পাঠানোর ক্ষমতা ছিল সীমিত।প্রায় ৭০ বছর ধরে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে।তবে বর্তমানে ডেটা স্থানান্তরের জন্য যে পরিমাণ দ্রুত গতি প্রয়োজন, এ পদ্ধতিতে তা সম্ভব নয়।অর্থাৎ পদ্ধতিটি যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না।আসলে, আগের তুলনায় এখন ডেটা পাঠানো হয় অনেক বেশি।প্রতি মুহূর্তে হাজার হাজার উপগ্রহ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে।সেগুলো থেকে বিপুল তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।এই তথ্যগুলো পৃথিবীতে পাঠাতে উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি যুক্ত লেজার প্রযুক্তি হতে পারে বেশ সম্ভাবনাময় ব্যবস্থা।

৬) পৃথিবীর  বিরল উপাদান ‘প্রমিথিয়াম’-এর সন্ধান

প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানীরা রহস্যময় তেজস্ক্রিয় পদার্থ প্রমিথিয়াম সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পেরেছেন। এর রাসায়নিক গঠন এখন কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে রসায়নবিদদের কাছে। প্রায় আট দশক বিজ্ঞানীরা এর খোঁজ করেছেন। পর্যায় সারণির নিচের দিকে অবস্থিত ল্যান্থানাইড সিরিজের ১৫টি উপাদানের মধ্যে প্রমিথিয়াম একটি। এগুলো বিরল ধাতু হিসেবে পরিচিত। শক্তিশালী চুম্বকীয় শক্তি এবং অস্বাভাবিক অপটিক্যাল বৈশিষ্ট্যের কারণে আধুনিক ইলেকট্রনিকসে এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ।

প্রমিথিয়ামের খোঁজে কাজ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির (ORNL) বিজ্ঞানীরা। এ সম্পর্কিত গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে নেচার জার্নালে। ১৯৪৫ সালে ওআরএনএল-এর বিজ্ঞানীরা প্রমিথিয়াম আবিষ্কার করলেও এই মৌলের গঠন সম্পর্কে জ্ঞান এখনো সীমিত। ফলে এর ব্যবহার মূলত পারমাণবিক ব্যাটারি এবং ক্যান্সার নির্ণয়ে সীমাবদ্ধ।

প্রমিথিয়াম-১৪৭ হলো প্রমিথিয়াম মৌলের একটি আইসোটোপ এবং এর অর্ধায়ু ২.৬ বছর।এই আইসোটোপটিই একমাত্র উৎস, যা থেকে প্রমিথিয়াম পাওয়া যায়।ওআরএনএল-এর বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ইভানভ জানিয়েছেন, ‘তেজস্ক্রিয় উপাদান থেকে উপযুক্ত নমুনা সংরক্ষণ করতে না পারার কারণে গত কয়েক দশক ধরে এই বিষয়ে গবেষণা করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ গত বছর আবিষ্কৃত একটি নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করে গবেষকরা পারমাণবিক চুল্লির বর্জ্য থেকে আইসোটোপ আলাদা করেন এবং এটি থেকে অত্যন্ত বিশুদ্ধ নমুনা তৈরি করেছেন গবেষণার জন্য। 

৭. দুই নতুন মাকড়সার সন্ধান

সম্প্রতি ভারতের দক্ষিণ পশ্চিমঘাটের ঘন জঙ্গলে দুটি নতুন প্রজাতির মাকড়সা আবিষ্কার করেছেন বাঙালি বিজ্ঞানীরা। কর্ণাটকের মুকাম্বিকা অভয়ারণ্য এবং কেরালার এরনাকুলাম জেলা থেকে পাওয়া গেছে এ প্রজাতি দুটি। মাকড়সা দুটির নাম রাখা হয়েছে যথাক্রমে হ্যাব্রোসেস্টাম বেঞ্জামিন (Habrocestum benjamin) এবং হ্যাব্রোসেস্টাম স্বামীনাথন (Habrocestum swaminathan)। এগুলোর নামকরণ করা হয়েছে প্রত্নতত্ত্ববিদ অধ্যাপক সুরেশ পি বেঞ্জামিন এবং সবুজ বিপ্লবের জনক এম এস স্বামীনাথনের নামে। এই মাকড়সাগুলো হ্যাম্ব্রোসেস্টাম সাইমন গণের মাকড়সা। ভারতের বিভিন্ন উপদ্বীপে পাওয়া এই মাকড়সাগুলো লাফ দিতে পটু। এই দুই প্রজাতির মাকড়সা গণটির মধ্যে আকার-আকৃতিতে সবচেয়ে বড়। ভারতের এরিঞ্জালাকুদার ক্রাইস্ট কলেজের (খ্রিস্ট কলেজ) গবেষকেরা এ মাকড়সা দুটি আবিষ্কার করেছেন। এ সম্পর্কিত প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে নিউজিল্যান্ডের জুটাক্সা জার্নালে।

আরও পড়ুন

৮. বিশ্বের প্রাচীনতম সৌর ক্যালেন্ডারের খোঁজ বিজ্ঞানীদের

টাইম অ্যান্ড মাইন্ড জার্নালের এক গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, তুরস্কে পাওয়া গেছে প্রায় ১৩ হাজার বছরের  পুরাতন ক্যালেন্ডার। এটি পাথরে খোদাই করা ছিল। এখানে আঁকা চিহ্নগুলো হতে পারে বিশ্বের প্রাচীনতম সূর্য ও চন্দ্র ক্যালেন্ডার।

দক্ষিণ তুরস্কের গোবেকলি টেপে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজ চলাকালীন খোদাই করা পাথরের এই স্তম্ভটি পাওয়া যায়। এখানে আরও এমন আঁকা চিহ্ন যুক্ত পাথর ও মন্দিরের অসংখ্য ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। এই স্তম্ভটি নিয়ে গবেষণা করেন এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই স্তম্ভটিতে ৩৬৫টি ভি আকৃতির চিহ্ন খোদাই রয়েছে। তাঁদের মতে, প্রতিটি ভি একদিন বোঝাতে আঁকা হয়েছে। এ ছাড়াও এই ক্যালেন্ডারে মোট ১২টি চন্দ্র মাস এবং ১১টি অতিরিক্ত দিন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে স্তম্ভটি আঁকা হয়েছিল ১০৮৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। খুব সম্ভবত সেই সময়ের একটি মহাজাগতিক ঘটনা লিপিবদ্ধ করতে এটি খোদাই করা হয়েছিল।

একটা ধূমকেতু পৃথিবীতে আঘাত করেছিল প্রায় ১৩ হাজার বছর আগে।ধূমকেতুটিযেআঘাতকরেছে, সেবিষয়টিরউল্লেখপাওয়াগেছেএক্যালেন্ডারে।এই ধূমকেতুর আঘাতের ফলে পৃথিবীতে শুরু হয়েছিল বরফযুগ। যদিও সব বিজ্ঞানী এ ধারণার সঙ্গে একমত নন।তবে ধারণা করা হয়, এ ঘটনার কথা লিপিবদ্ধ করতেই বানানো হয়েছে স্তম্ভটি।আর এতে আঁকা চিহ্নগুলো থেকে বোঝা যায়, সেই সময়ের মানুষ সূর্য, চাঁদ এবং নক্ষত্রপুঞ্জের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে সৌর ক্যালেন্ডার তৈরি করতে পেরেছিল।     

লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ, ঢাকা

সূত্র: লাইভ সায়েন্স, দ্য হিন্দু ডট কম, ডেকানহেরাল্ড ডটকম, আইএফএল সায়েন্স, সায়েন্স এলার্ট, নাসা, স্পেস ডটকম, ফোর্বস, নিউ সায়েন্টিস্ট, বিজ্ঞানচিন্তা