১৬তম আন্তর্জাতিক আর্থ সায়েন্স অলিম্পিয়াডে মোট ১০টি পদক অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে তিনটি স্বর্ণপদক ও সাতটি ব্রোঞ্জপদক। পাশাপাশি অন্যান্য বিভাগে সম্মানসূচক স্বীকৃতি পেয়েছে মোট ১১টি৷ এখন পর্যন্ত এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পদক অর্জনের রেকর্ড।
চলতি বছর আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াড আয়োজনে কোন দেশ আগ্রহ না দেখানোর কারণে পুরো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় অনলাইনে। তাই রাজধানীর গুলশান থেকে আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে অংশ নেয় বাংলাদেশ দল।
এ বছরের স্বর্ণপদক এসেছে ভিন্ন ভিন্ন বিভাগে। ন্যাশনাল টিম ফিল্ড ইনভেস্টিগেশন (এনটিএফআই) অংশে বাংলাদেশ দল প্রথমবারের মতো দলীয় স্বর্ণপদক লাভ করেছে। বাকি দুটি স্বর্ণপদক এসেছে আর্থ সিস্টেম প্রজেক্ট (ইএসপি) নামের একটি বহুজাতিক দলীয় অনুসন্ধানী প্রকল্পে। এ প্রকল্পে এবারই প্রথম স্বর্ণপদক পেল বাংলাদেশ।
অন্যদিকে, ডেটা মাইনিং টেস্টে বরাবরের মতো এবারও বাংলাদেশ পেয়েছে ব্রোঞ্জপদক। ৭টি ব্রোঞ্জপদকের চারটিই এসেছে এখান থেকে। বাকি ৩টি ব্রোঞ্জ পদক এসেছে আর্থ সিস্টেম প্রজেক্ট (ইএসপি) থেকে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনলাইনে ৩ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী থেকে প্রাথমিক বাছাই ও পরে বিভাগীয় বাছাইপর্বে ৩০০ শিক্ষার্থীকে নির্বাচন করা হয়। মার্চে তাদের নিয়ে দেশের আটটি জেলায় গ্রিন ডে ট্রেইনিং আয়োজন করা হয়।
দলের চার শিক্ষার্থী পেয়েছে তিনটি করে পদক। তাঁরা হলেন নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম মাহি, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী আহসানুর রাজী, চট্টগ্রামের প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থী তাসনিম রেজা এবং স্কলার্সহোম স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী মোহতাসিম হাফিজ। প্রথম তিন শিক্ষার্থী পেয়েছেন একটি করে স্বর্ণপদক ও দুটি ব্রোঞ্জপদক। আর তিনটি ব্রোঞ্জপদক পেয়েছেন মোহতাসিম হাফিজ।
দলের অন্য সদস্যরা হলেন মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সাইমুন শহীদ লিয়াম, দিনাজপুর জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী তায়াসসুক আহমেদ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফারহানা রিফাত এবং খুলনার সরকারি এম এম সিটি কলেজের অনুরাগ দাশ। এ ছাড়া অতিথি হিসেবে দলে ছিলেন তাসনুভা বিদিতা, মো. ফাইজুল কবীর জিশান ও তারান্নুম আহমেদ চৌধুরী।
এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনলাইনে ৩ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী থেকে প্রাথমিক বাছাই ও পরে বিভাগীয় বাছাইপর্বে ৩০০ শিক্ষার্থীকে নির্বাচন করা হয়। মার্চে তাদের নিয়ে দেশের আটটি জেলায় গ্রিন ডে ট্রেইনিং আয়োজন করা হয়। তারপর এপ্রিল মাসে আয়োজিত হয় জাতীয় পর্ব। সেখানে নির্বাচিত ৫৫ জনকে নিয়ে প্রাক-দল নির্বাচনী পরীক্ষা এবং পরে দুই ধাপে নির্বাচনী পরীক্ষার মাধ্যমে সেরা ৮ শিক্ষার্থীকে বাছাই করা হয়। ন্যাশনাল আর্থ অলিম্পিয়াডে ৭ ধাপে সাফল্যের পরিচয় দিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে এই আট শিক্ষার্থী।
আন্তর্জাতিক আর্থ সায়েন্স অলিম্পিয়াড শুরু হয় ২০০৭ সালে। বাংলাদেশ দল ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৮ বার অংশগ্রহণ করেছে। এ বারই পেয়েছে সর্বোচ্চ সাফল্য।
এরপর সেরা ৮ শিক্ষার্থী ও অতিরিক্ত ৩ জনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগে ক্যাম্প করানো হয়। ক্যাম্প শেষে ন্যাশনাল টিম ফিল্ড ইনভেস্টিগেশনের (এনটিএফআই) জন্য কুয়াকাটা ও খাগড়াছড়িতে পাঠানো হয় ফিল্ড ট্রিপে। সেখান থেকে মাটি ও পাথরের নমুনা সংগ্রহ করে ভূতত্ত্ব গবেষণাগারে সেগুলো বিশ্লেষণের পর বাংলাদেশের দুটি দল তাদের এনটিএফআই প্রকল্প সম্পন্ন করে। শেষে ১৯ থেকে ২৬ আগস্ট তারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাফল্যের পরিচয় দেয়।
আন্তর্জাতিক আর্থ সায়েন্স অলিম্পিয়াড শুরু হয় ২০০৭ সালে। বাংলাদেশ দল ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৮ বার অংশগ্রহণ করেছে। এ বারই পেয়েছে সর্বোচ্চ সাফল্য।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ দলের উপদেষ্টা ও পরামর্শদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী মতিন আহমেদ এবং ন্যাশনাল আর্থ অলিম্পিয়াড নলেজ টিমের দলনেতা আরিয়ান আন্দালিব আজিম।