আন্তর্জাতিক আরডুইনো ডিজাইন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের সাফল্য
ইতালীয় ওপেন সোর্স ইলেকট্রনিক কোম্পানি আরডুইনো ডিজাইন ফর আ কজ-২০২১-এ রানার আপ হয়েছেন বাংলাদেশি প্রকৌশলী কামরুল হোসেন। তিনি বাংলাদেশের প্রযুক্তি স্টার্টআপ বাইবিট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও এলিমেন্ট-১৪-এর একজন সক্রিয় সদস্য ।
গত জুলাইয়ে নিউইয়র্ক ইলেকট্রনিকস অনলাইন কমিউনিটির সদস্যদের জন্য আরডুইনো ডিজাইন ফর অ্যা কজ-২০২১ শিরোনামের একটি চ্যালেঞ্জের আয়োজন করে। চ্যালেঞ্জটির চলতি বছরের থিম ছিল: ক্লোজ টু ইউর হার্ট।
বৈশ্বিক দুর্যোগের সময় হৃদয়কে নাড়া দেয় এমন জনহিতকর সমস্যার সবচেয়ে সৃজনশীল প্রযুক্তিভিত্তিক সমাধানই ছিল চ্যালেঞ্জটির উদ্দেশ্য। চ্যালেঞ্জের শর্ত ছিল, আরডুইনোর তৈরি ন্যানো ৩৩ আইওটি বোর্ড ব্যবহার করে জনহিতকর কোনো প্রযুক্তিপণ্যের ডিজাইন করতে হবে। সেই চ্যালেঞ্জে কামরুলের ডিজাইন রানার আপ হয়েছে। কামরুলের বিজয়ী নকশাটি ছিল কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য একটি পর্যবেক্ষণ যন্ত্র। তিনি এর নাম দিয়েছেনে ভাইটাল কেয়ার। এটি সুস্থতা-পরবর্তী জটিলতা পর্যবেক্ষণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
চ্যালেঞ্জের প্রাথমিক প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে কমিউনিটির ৫০ জন নির্বাচিত সদস্যের প্রত্যেককে বিনামূল্যে একটি ন্যানো ৩৩ আইওটি বোর্ড দেওয়া হয়। প্রতিযোগীরা প্রায় চার মাস ধরে উন্নয়নের বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের নির্মাণ প্রক্রিয়া এবং শেষে চূড়ান্ত ফলাফল নিয়মিতভাবে ব্লগ রিপোর্ট করেন। ২ জুলাই ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৪ আগস্ট কামরুলের ভাইটাল কেয়ার নিয়ে আরডুইনো তাদের ওয়েবসাইট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
পুরস্কার হিসেবে কামরুল হোসেন পেয়েছেন একটি ৬৪ গিগাবাইট আইপ্যাড এয়ার ট্যাবলেট কম্পিউটার এবং পছন্দের কোনো দাতব্য প্রতিষ্ঠানে ২৫০ ডলার দান করার সুযোগ।
কামরুল হোসেনের বানানো ভাইটাল কেয়ারের দুটি অংশ। প্রথমটি বুকের ওপর ইলাস্টিক বেল্ট দিয়ে আটকানো হয়। এটি মূলত এক চ্যানেলের ইসিজি রেকর্ড করে। এ তথ্য থেকে সফটওয়্যার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে হৃদস্পন্দন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বের করা হয়। অপর অংশটি হাতের কব্জির ওপর আটকানো যায়। এটি তাপমাত্রা এবং রক্তের অক্সিজেন স্যাচুরেশন পরিমাপ করে। ভাইটাল কেয়ার সিস্টেমটি IOT সক্ষম এবং এর প্যারামিটারগুলি একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ। অ্যাপটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে দূর থেকে সংগ্রহ ও পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব, যা টেলিমেডিসিনেও ব্যবহার করা যাবে।
কামরুল হোসেন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকসে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ফিজিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগ বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি বাইবিট লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক খোন্দকার সিদ্দিক-ই রব্বানীর তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্যসেবা প্রযুক্তি ও বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং গবেষণায় কাজ শুরু করেন।