দেশলাই কাঠি দিয়ে ম্যাচবাক্সের পাশের অংশটায় ঘষা দিলেই দপ করে আগুন জ্বলে ওঠে। বেশ কিছু রাসায়নিকে মোড়া থাকে দেশলাইয়ের কাঠির মাথা। আগুন জ্বলার পেছনে তার কিছুটা অবদান তো অবশ্যই আছে। তবে আসল কারিকুরিটা থাকে দেশলাই বাক্সের গায়ে।
বাক্সের দুপাশের কালো মতোন অংশটুকু মূলত লাল ফসফরাস আর অস্বচ্ছ এবং অমসৃণ কাঁচের মিশ্রণ দিয়ে তৈরি। হাত দিলেই বোঝা যায়, খসখসে। এর ওপরে দেশলাইয়ের কাঠি দিয়ে ঘষা দিলে 'ঘর্ষণ' হয়। পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায়, ঘর্ষণ মানে, দুটো তল একটা আরেকটার উপর দিয়ে যাওয়ার সময় বাধা পাচ্ছে। এই ঘর্ষণের ফলে তাপ তৈরি হয়। তাপ এবং বাতাসের সংস্পর্শে লাল ফসফরাস পরিণত হয় সাদা ফসফরাসে। সাদা ফসফরাস আবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিস্ফোরিত হয়। এই বিস্ফোরণের ফলে প্রয়োজনীয় স্ফুলিঙ্গ তৈরি হয়, জ্বলে ওঠে আগুন।
যখনই স্ফুলিঙ্গ তৈরি হয় হয়, সঙ্গে সঙ্গে দেশলাইয়ের কাঠির কাজ শুরু হয়ে যায়। পটাসিয়াম ক্লোরেটের বন্ধন ভেঙে পড়তে শুরু করে, যার ফলে উৎপন্ন হয় অক্সিজেন।
এদিকে ম্যাচের কাঠির মাথায় থাকে অস্বচ্ছ এবং অমসৃণ কাঁচ, সালফার, কিছুটা আঠা আর পটাসিয়াম ক্লোরেট নামের একটা যৌগের মিশ্রণ। যখনই স্ফুলিঙ্গ তৈরি হয় হয়, সঙ্গে সঙ্গে দেশলাইয়ের কাঠির কাজ শুরু হয়ে যায়। পটাসিয়াম ক্লোরেটের বন্ধন ভেঙে পড়তে শুরু করে, যার ফলে উৎপন্ন হয় অক্সিজেন। আমরা সবাই জানি, অক্সিজেন আগুনকে জ্বলতে সাহায্য করে। এদিকে সালফারও জ্বলতে শুরু করে, ফলে উৎপন্ন হয় আলো। আর, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জ্বলতে থাকে কাঠি।
অর্থাৎ, দেশলাই কাঠিটা এখানে জ্বালানি হিসেবে কাজ করে। কিন্তু আগুন জ্বলে ওঠা বা স্ফুলিঙ্গের পেছনের কারসাজিটুকু করে দেশলাই বাক্স স্বয়ং!