মঙ্গলে কি মানববসতি তৈরি করা সম্ভব? যদি তৈরি করা সম্ভব হয়, তাহলে এখনো হচ্ছে না কেন? আর যদি সম্ভব না হয়, তাহলে কেন? সেখানে তো চাঁদ-সূর্য সবই আছে।
উত্তর: চমৎকার প্রশ্ন। চিন্তাভাবনা করেই প্রশ্ন করেছ। বেশ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায় তোমার প্রশ্নে। কারণ, তুমি জানতে চেয়েছ, মঙ্গল গ্রহে মানববসতি তৈরি করা সম্ভব কি না। সবাই জানতে চায়, সেখানে মানুষ কবে যাবে। কিন্তু বসতি স্থাপনের ব্যাপারটি আরও কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার স্বপ্ন আমরা সবাই দেখি। নাসা একটি পরিকল্পনা নিয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে সেখানে মানুষ পাঠাবে। স্পেস এক্স তো আরও আগেই পাঠাতে চায়। তারা বলছে, ২০২৪ সালের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠাবে। কিন্তু মানুষ গেলেও সেটি হবে সাময়িক কালের জন্য। হয়তো তাঁবু খাটিয়ে অক্সিজেনের ব্যবস্থা এবং সঙ্গে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার ব্যবস্থা করে সেখানে মানুষ পাঠানো যাবে, কিন্তু বসতি স্থাপন করতে হলে অনেক বড় প্রস্তুতি লাগবে।
মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডলের ৯৫ ভাগেরও বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড ও অক্সিজেন খুবই কম। সুতরাং সেখানে জনবসতি স্থাপন করতে হলে প্রথমে বায়ুমণ্ডলে প্রচুর অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে হবে। এটিই হলো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কীভাবে সে ব্যবস্থা করা যায়?
সেখানে প্রথমে বনায়ন করতে হবে। সবুজ গাছ মঙ্গলের কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন উন্মুক্ত করবে। এভাবে ধীরে ধীরে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের অংশ বাড়াবে। হয়তো তাঁবু খাটিয়ে অক্সিজেনের ব্যবস্থা এবং সঙ্গে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার ব্যবস্থা করে সেখানে মানুষ পাঠানো যাবে, কিন্তু বসতি স্থাপন করতে হলে অনেক বড় প্রস্তুতি লাগবে।
সমস্যা আরও আছে। মঙ্গলের অভিকর্ষ শক্তি পৃথিবীর অভিকর্ষ শক্তির মাত্র ৩৮ শতাংশ। আবার মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠের বায়ুমণ্ডলের মাত্র ১ শতাংশ। এত হালকা বায়ুমণ্ডলে পর্যাপ্ত অক্সিজেন থাকলেও স্থায়ী বসবাস কঠিন।
তারপরও মানুষ আশায় বাঁচে। উপায় একটি অবশ্য আছে। সেখানে প্রথমে বনায়ন করতে হবে। সবুজ গাছ মঙ্গলের কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন উন্মুক্ত করবে। এভাবে ধীরে ধীরে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের অংশ বাড়াবে। এরপর হয়তো এমন দিন আসবে, যখন মানুষ সেখানে গিয়ে বসতি স্থাপন করবে।
কিন্তু সাবধান। এ পরিকল্পনা জানলে এখনই মঙ্গলে জমি বিক্রির ব্যবসা শুরু হয়ে যেতে পারে! তবে বনায়ন করে পরিবেশ তৈরি করতে অন্তত ১০০ বছর তো লাগবেই। তাই এটি নিশ্চিত, আমাদের প্রজন্ম হয়তো মঙ্গলে বসতি স্থাপন দেখে যেতে পারবে না।
প্রশ্ন করেছেন শারিয়া চৌধুরী, ষষ্ঠ শ্রেণি, সিটি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, চট্টগ্রাম