দেখে অভ্যস্ত হয়ে গেছি যে আমাদের হাত ও পায়ের আঙুল ছোট–বড়। তাই খুব বড় কোনো প্রশ্ন নেই। কিছু প্রাণীর আঙুলও এ রকম। কিন্তু কেন? হাঁটার সুবিধা, তাই হয়তো পায়ের আঙুলগুলো বিশেষ ছন্দে সজ্জিত। কিন্তু হাতের আঙুল? অনেক প্রাণী গাছের ফল খেয়ে বাঁচে। ডালে ডালে ঘুরতে হয়। হয়তো সে জন্যই তাদের মাঝের আঙুল বড় ও শক্ত। তর্জনীও বেশ শক্তসমর্থ। বুড়ো আঙুলের অবস্থান একটু বিশেষভাবে সাজানো, যেন লাফ দিয়ে উঁচু কোনো গাছের ডাল শক্ত মুঠোয় ধরা যায়। শিকারি–যুগে মানুষ দল বেঁধে পশু শিকারে যেত, সে সময় কোনো শব্দ করলে পশুপাখি সতর্ক হয়ে সরে পড়তে পারে। তাই হাতের আঙুলে ইঙ্গিত প্রদান করা জরুরি হয়ে ওঠে। বুড়ো আঙুলের পাশের আঙুল তর্জনী এখানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শিকারের বিশেষ কোনো দিক নির্দেশনায় বা সবাইকে চুপচাপ থাকতে বলার জন্য এ আঙুল বেশি ব্যবহৃত হয়। সেভাবেই এর অবস্থান ও আকার নির্ধারিত হয়েছে। নিঃশব্দে আনন্দ প্রকাশের জন্য বুড়ো আঙুলের বিশেষ ভঙ্গি রয়েছে। যেকোনো বস্তু শক্ত করে ধরার ব্যবস্থার জন্যও এ আঙুলের বিশেষ আকার ও অবস্থান। এ ধরনের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী আমাদের আঙুলের আকার জন্মসূত্রেই নির্ধারিত হয়। জন্মের আগে থেকেই মায়ের গর্ভে টেস্টোস্টেরোন হরমোন নিঃসৃত হয়ে শিশুর সংস্পর্শে আসে। যত বেশি টেস্টোস্টেরোন হরমোন পায়, শিশুর অনামিকা বা ছোট আঙুলের পাশের আঙুলটি তত বেশি লম্বা হয়। এর ফলে নানা ধরনের শারীরিক অসংগতি দেখা দিতে পারে। তাই সাধারণত তর্জনী ও অনামিকার দৈর্ঘ্য প্রায় সমান। হাতের অন্য আঙুলগুলোর দৈর্ঘ্য সমন্বিত মাত্রায় থাকে। এর ফলে লিখতে বা কোনো জিনিস শক্ত করে ধরতে সুবিধা। এককথায় বলা যায়, জীবনের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের হাতের আঙুলের দৈর্ঘ্য ছোট-বড় হয়।