বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শরীরের চামড়া কুঁচকে যায় কেন?

বয়স বাড়লে চেহারায় বেশ পরিবর্তন আসে। বিশেষভাবে চামড়ায় ভাঁজ পড়ে বা চামড়া কুঁচকে যায়। চোখের নিচে, গলা ও হাত–পায়ের চামড়া মনে হয় যেন কিছুটা ঝুলে পড়ছে। এর প্রধান কারণ হলো বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে কোলাজেনের উৎপাদন কমে যায়। এই কোলাজেন হলো একধরনের প্রোটিন। এরা মূলত চামড়া, অস্থি, পেশি, লিগামেন্ট, টেন্ডন প্রভৃতির জন্য প্রয়োজনীয় বিল্ডিং ব্লক। এর অভাবে চামড়ার স্থিতিস্থাপকতা কমে যায়। চামড়া শুকিয়ে ম্লান হয়ে পড়ে। চেহারার ঔজ্জ্বল্য কমে যায়। দুর্বল মনে হয়। তা ছাড়া সূর্যের প্রখর আলোয় বেশি সময় কাটালে সূর্যরশ্মির আলট্রাভায়োলেট রে–এর প্রভাবে চামড়ার ইলাস্টিন তন্তু নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে হাত–পা প্রসারিত করলে চামড়ার প্রসারণ আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে সমস্যা হয়। ফলে চামড়া ঝুলে পড়ে। বয়সের কারণে এসব সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক। এর প্রতিকারের জন্য আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়া যেতে পারে। তবে টাটকা ও ভিটামিন খনিজযুক্ত ফলমূল, শাকসবজি খাওয়া সবচেয়ে উপকারী। বিভিন্ন ঋতুতে আমাদের দেশি ফলই ভালো। দিনে অন্তত পাঁচ রঙের পাঁচ রকম ফল অল্প পরিমাণে খেলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়। যেমন এই বর্ষার সময় আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম, আনারস প্রভৃতি খাওয়া যায়। আবার শীতকালে আপেল, কমলা, আমলকী প্রভৃতি হাতের কাছেই পাওয়া যায়। অন্য সময় কলা, জাম্বুরা, তালের শাঁস। আমাদের দেশে তো ফলের অভাব নেই। তবে পরিমাণমতো খেতে হবে। বেশি খেলে স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে।

সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায় প্রতিদিন ব্যায়াম করলে। বয়স অনুযায়ী কমবেশি দিনে অন্তত এক ঘণ্টা বা বেশি বয়স্কদের অন্তত ১৫ মিনিট মাঝারি গতিতে হাঁটা সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম। খোলা পার্কে হাঁটুন। সেই সঙ্গে জোরে জোরে বুক ভরে শ্বাস নিন ও ধীরে ধীরে ছাড়ুন। যাকে বলে ব্রিদিং এক্সারসাইজ। হাত–পায়ের কবজি, কনুই, পায়ের গোড়ালি, হাঁটুসহ সব অস্থিসন্ধি, কোমর, ঘাড়, চোখের পাতা প্রভৃতি কয়েক মিনিট করে সামান্য নাড়াচাড়া করলেও অনেক উপকার পাওয়া যায়। এভাবে বয়স বাড়লেও চেহারায় ঔজ্জ্বল্য বেশ কিছু বছর ধরে রাখা সম্ভব। এই করোনাকালে অবশ্য বাইরে ব্যায়াম বা হাঁটাচলা সমস্যা। সে ক্ষেত্রে বাড়ির খোলা ছাদে বা পার্কে ব্যায়াম করা যায়। কিন্তু মানুষের বেশি ভিড় থাকলে মুখে মাস্ক পরতে হবে।