গাছ আগে না বীজ আগে

স্পোর থেকে বীজের বৈশিষ্ট্য তৈরি হতে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন সময় লেগেছেছবি: সংগৃহীত

ডিম আগে না মুরগি আগে, এটা অনেক পুরাতন বিষয়। এ নিয়ে বিতর্কও নেহাত কম হয়নি। সে বিতর্কের দিকে এখন আর নতুন করে যাবো না। আজ বরং গাছের কথা বলি। বেশিরভাগ গাছই ফুল, ফল ও বীজের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে। মুরগি যেমন ডিমের সাহায্যে বাচ্চা দেয়, অনেকটা সেরকম। বেশিরভাগ গাছই বীজ থেকে জন্মে। যদিও কথাটা বৈজ্ঞানিকভাবে পুরোপুরি সত্য নয়। তবে তর্কের খাতিরে ধরে নিই, এ কথা ঠিক। বীজ থেকে গাছ হয় আবার গাছ থেকে তৈরি হয় বীজ। বীজ আর গাছের এ চক্রের মধ্যে কোনটি আসলে আগে তৈরি হলো? বিজ্ঞানীরাই বা কী বলেন এ ব্যাপারে?

স্থলে জন্মানো সবচেয়ে পুরানো গাছের জীবাশ্মের বয়স প্রায় ৪৭০ মিলিয়ন বছর। রূপ ও বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে প্রাচীন এ গাছের মিল পাওয়া যায় লিভারওয়ার্থ শ্রেণির মস বা শ্যাওলা জাতীয় উদ্ভিদের সঙ্গে। মস জাতীয় এসব উদ্ভিদ স্পোরের মাধ্যমে বংশবিস্তার করত। এটা এক ধরনের অযৌন প্রজনন ব্যবস্থা। স্পোর গাছের বিশেষ এক ধরনের কোষ। দেহকোষ থেকে স্পোর তৈরি হলেও এটা আলাদাভাবে নতুন উদ্ভিদ জন্ম নিতে পারে। মস, ফার্ন বা অনেক ব্যাকটেরিয়াও স্পোরের সাহায্যে অযৌন প্রজনন প্রক্রিয়া বংশবিস্তার করে।

স্পোর থেকে বীজের বৈশিষ্ট্য তৈরি হতে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন সময় লেগেছে। তারপর বীজ থেকে জন্ম নিয়েছে পৃথিবীর প্রথম উদ্ভিদ।

স্পোর সাধারণত এককোষী হয়। অন্যদিকে বীজ হয় বহুকোষী। বীজে থাকে নিষিক্ত ভ্রুণ। ভ্রুণের চারপাশে থাকে শক্ত মৃতকোষের আবরণ। অনাগত প্রজন্মকে নিরাপত্তা দিতেই প্রকৃতির এ বিশেষ ব্যবস্থা।

বিজ্ঞানীদের মতে, স্পোর থেকে বীজের বৈশিষ্ট্য তৈরি হতে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন সময় লেগেছে। তারপর বীজ থেকে জন্ম নিয়েছে পৃথিবীর প্রথম উদ্ভিদ। বুদ্ধিমান পাঠক নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন গাছ আগে এসেছে নাকি বীজ।

লেখক: শিক্ষার্থী, তেজগাঁও কলেজ, ঢাকা

সূত্র: সায়েন্স ফোকাস