কোনো প্রাণী সর্বোচ্চ কত বড় হতে পারে

মাটিতে বাস করে এমন প্রাণীদের ভর ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ টনের মতো হতে পারে।ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবীতে এককালে বিশাল সব ডাইনোসর ছিল। কালের আবর্তে তারা বিলীন হয়ে গেছে। তবে ডাইনোসোর পৃথিবীর বৃহত্তম প্রাণী নয়। পৃথিবীর বৃহত্তম প্রাণীদের তালিকার শীর্ষের অনেকখানি তিমিদের দখলে। ব্লু হোয়েল বা নীল তিমি পৃথিবীর বৃহত্তম প্রাণী। ইতিহাসে এর চেয়ে বড় ও ভারী কোনো প্রাণী পৃথিবীতে আসেনি। অন্তত বৈজ্ঞানিক প্রমাণাদি অনুসারে ফসিল বিশ্লেষণ করে এ সিদ্ধান্তে এসেছেন বিজ্ঞানীরা। নীল তিমি ভরের দিক থেকে গড়ে ১১০ টনের মতো হয়। তবে এদের ভর সর্বোচ্চ ১৯০ টনও হতে পারে। এদিকে লম্বায় এগুলো হয় প্রায় ৮০ ফুটের মতো।

স্বাভাবিকভাবে মনে প্রশ্ন আসে, কোনো প্রাণী সর্বোচ্চ কত বড় হতে পারে? হিসাবটা করার বৈজ্ঞানিক উপায় হলো, এর হাড় ও পেশীর শক্তি হিসাব করা। অর্থাৎ হাড় ও পেশী কত বড় ও ভারী দেহকে বইতে পারবে, সে হিসাব করলে বোঝা যাবে, একটি প্রাণী সর্বোচ্চ কত বড় হতে পারে। বিজ্ঞানীরা সে হিসাব করেছেন। দেখেছেন, ভূচারী, অর্থাৎ মাটিতে বাস করে, এমন প্রাণীদের ভর ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ টনের মতো হতে পারে। এ পর্যন্ত তাদের হাড় ও পেশী নিজেদের দেহের ভর সইতে পারবে। এই আকারের প্রাণীগুলো নড়াচড়াও করতে পারবে, তবে ধীর হয়ে যাবে তাদের গতি।

মজার বিষয় হলো, পৃথিবীর বৃহত্তম ডাইনোসরটি এই সীমার ধারেকাছেও পৌঁছাতে পারেনি। আর্জেন্টিনোসোর নামের বৃহত্তম এই ডাইনোসরের ভর ছিল ৮০ টন। বোঝাই যাচ্ছে, নীল তিমির ধারেকাছে ছিল না এগুলো, আরও বড় হওয়া তো পরের কথা।

তবে নীল তিমিদের সবাই কিন্তু সর্বোচ্চ সীমার কাছে পৌঁছাতে পারে না। কারণ, প্রকৃতি এই বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করে। ১৮০-১৯০ টনের একটি নীল তিমিকে দিনে ১৫ লাখ ক্যালোরির সমপরিমাণ খাবার খেতে হয়। তাদের প্রিয় খাবার ক্রিল নামে একধরনের মাছ। প্রতিবছর বিশ্বের মোট ক্রিলের প্রায় অর্ধেক খেয়ে ফেলে তিমি, সিল মাছ ও অন্য মাছেরা। ঘটনা হলো, অনেক নীল তিমি যদি ১৮০-১৯০ টনের মতো বড় হয়ে যায়, তবে তারা আর পর্যাপ্ত খাদ্য পাবে না। ফলে তাদের জননকাজও বাধাগ্রস্ত হবে। এ কারণে আগে যেমন বললাম, তিমির গড় ভর ১১০ টনের মতো হয়। এভাবেই ভারসাম্যে থাকে প্রকৃতি।

সূত্র: বিবিসি সায়েন্স ফোকাস, উইকিপিডিয়া