ডাইনোসর কীভাবে ঘুমাত

শিল্পীর কল্পনায় ডাইনোসরছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্র বা ডকুমেন্টরিতে কত শত ডাইনোসর আমরা দেখি। দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পৃথিবীর বুকে। শিকার করছে অথবা পরিণত হচ্ছে শিকারে। ডাইনোসরদের সম্পর্কে আমরা এখন যা জানি তার সবই তাদের জীবাশ্মের সাক্ষ্য। বিজ্ঞানীরা মাটি খুড়ে, পাথর কেটে ডাইনোসরের আকার, আকৃতি, আচরণ, বয়স সহ নানা বিষয় বের করেছেন। বিস্তর গবেষণা করে জীবন্ত করেছেন প্রাচীন এসব প্রাণীদের গল্প।

এসব কাজের শতভাগ বিজ্ঞান মেনে করা হয়, ব্যাখ্যা দেওয়া যায়। সমস্যা হলো, চলচ্চিত্র বা ডকুমেন্টরিতে ডাইনোসরের চলাচল, হাকডাক বা শিকারের কাহিনি দেখা গেলেও, তারা কীভাবে ঘুমাত তা সচরাচর দেখা যায় না। প্রাণী যেহেতু, ঘুমাতে তো হতোই। প্রশ্ন হলো, ডাইনোসর ঘুমানোর ভঙ্গিটা কেমন ছিল? শুয়ে ঘুমাত নাকি ঘোড়ার মতো দাঁড়িয়ে একটু ঝিমিয়ে নিত?

এসব প্রশ্নের স্বদুত্তোর এতদিন বাদে এসে সঠিকভাবে দেওয়া কঠিন। তবে ট্রুডনটিড গ্রুপের মেই লঙ প্রজাতির একটি জীবাশ্ম থেকে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। চাইনিজ শব্দ ‘মেই লঙ’ এর অর্থ ঘুমন্ত ড্রাগন। ২০০৪ সালে চীনের একদল জীবাশ্মবিদ দেশটির লিয়াওনিং প্রদেশে জীবাশ্মটি খুঁজে পান। আকার-আকৃতিতে বর্তমান যুগের হাঁসের সঙ্গে এর মিল লক্ষ্য করা যায়।

আরও পড়ুন
ডাইনোসর মেই লঙ-এর জীবাশ্ম
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন

১২৫ মিলিয়ন বছরের পুরানো ডাইনোসরের জীবাশ্মে প্রায় অক্ষত কঙ্কাল পান গবেষকেরা। দেখে মনে হয়, আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের কারণে ঘুমন্ত অবস্থাতে শ্বাসবন্ধ হয়ে মারা যায় ডাইনোসরটি। অনেকটা ইতালির পম্পেই নগরীর ভিসুভিয়াসে আগ্নেয়গিরির ফলে যে ঘটনা ঘটেছিলো মানুষের ভাগ্যে, সেরকম।

কঙ্কাল দেখে বোঝা যায়, ডাইনোসরটি পাখির মতো লেজ মাথা মুড়িয়ে ঘুমাত। শরীরের ভাজকরা অঙ্গের উপরে বসে বাহুর ওপরে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে। সাধারণত মাথার তাপমাত্রা ঠিক রাখতে পাখিরা এভাবে ঘুমায়। উষ্ণ রক্তের প্রাণীদের জন্য বিষয়টি জরুরী। এখান থেকে একটা প্রশ্ন আসে, ডাইনোসর কি তাহলে উষ্ণ রক্ত বিশিষ্ট প্রাণী ছিল? তা অন্য কোনো লেখায় জানার চেষ্টা করবো।

এ আবিষ্কার থেকে ছোট ডাইনোসরগুলো কীভাবে ঘুমাত সে সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। তবে অজানাই থেকে যায় ব্রাকিওসরাস ও টিটোনসরাসের মতো অতিকায় ডাইনোসরদের ঘুমানোর পদ্ধতি ও সময়। ভবিষ্যতে উন্নত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে হয়ত-বা সেসব প্রশ্নেরও উত্তর মিলবে।

সূত্র: সায়েন্স ফোকাস