প্যারাসিটামল খেলে জ্বর কমে কেন

প্রতীকী ছবি

মাঝেমধ্যে রোগজীবাণু আক্রমণ করে আমাদের শরীরে। আবার হঠাৎ পড়ে গিয়ে আঘাত লাগে দেহে। এমন পরিস্থিতিতে শরীরের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কিছু রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে। এই রাসায়নিক পদার্থগুলোকে বলা হয় অটোকয়েডস (Autacoids)। দেহে বিভিন্ন ধরনের অটোকয়েড তৈরি হয়। এসব অটোকয়েড নিঃসরিত হলে আঘাতের স্থানে ব্যথা অনুভূত হয়। মাঝেমধ্যে এসব স্থান ফুলেও যায়। কখনো আবার বেড়ে যায় দেহের তাপমাত্রা। এই তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াকেই আমরা বলি জ্বর।

আমাদের মস্তিষ্কে হাইপোথ্যালামাস নামে একটি অংশ আছে। এই অংশের কাজ শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা। রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য শরীর ডাইনোপ্রোস্টন নামে একটি অটোকয়েড নিঃসরণ করে। হাইপোথ্যালামাসে ডাইনোপ্রোস্টনের পরিমাণ বেড়ে গেলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়।

প্যারাসিটামল

ধরুন, আপনার শরীরে কিছু ক্ষতিকর জীবাণু প্রবেশ করেছে। এখন শরীরের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা যত দ্রুত সম্ভব এই জীবাণুগুলোকে ধ্বংস করতে চাইবে। আর সে জন্য প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ডাইনোপ্রোস্টন তৈরি করতে শুরু করে। ফলে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। একেই আমরা জ্বর বলি। এই জ্বর কমাতে হলে ডাইনোপ্রোস্টন তৈরি বন্ধ করতে হবে। এটা আবার তৈরি হয় COX-2 এবং mPGES-1 নামে দুটি এনজাইমের সাহায্যে। এই দুটি এনজাইম বন্ধ করতে পারলে ডাইনোপ্রোস্টন তৈরি বন্ধ হয়ে যাবে। কমে যাবে দেহের তাপমাত্রা। আমরা প্যারাসিটামল বা অ্যাসপিরিন খেলে তা রক্তের সঙ্গে মিশে এই এনজাইম দুটি তৈরি হওয়া বন্ধ করে দেয়। এ জন্য প্যারাসিটামল খেলে দেহের তাপমাত্রা কমে। অর্থাৎ জ্বর থাকে না। তবে তাতে রোগ বা কোনো ইনফেকশন হলে তা সেরে যায় না। সে জন্য আলাদা করে ওষুধ খেতে হয়। মনে রাখতে হবে, প্যারাসিটামল বা যেকোনো ওষুধই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত।