পতঙ্গের নাম বোমারু বিটল

রূপকথায় ড্রাগনের গল্প পাওয়া যায়। উড়ে উড়ে মুখ দিয়ে উগলে দেয় আগুন। পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে পারে জনপদ। বাস্তবে অবশ্য এমন প্রাণীর প্রমাণ পাওয়া যায় না। তবে ফুটন্ত তরল উপাদান নিঃসরণ করে, এমন পোকার আসলেই অস্তিত্ব আছে।

নাম বোমারু বিটল (Bombardier beetle)। দেখতে অনেকটা গুবরে পোকার মতো। অনিরাপদ বোধ করলে ছোট্ট এই পোকার পেট থেকে শত্রুর দিকে ছুড়ে মারে রাসায়নিক তরল। তরলে কী থাকে? সাধারণ দুটি উপাদান। হাইড্রোকুইনোন এবং হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড। নিজের শরীরে তৈরি করে এই তরল। এরপর পেটের মধ্যে দুটি আলাদা থলেতে জমা রাখে এ রাসায়নিক দুটি। পেছন দিয়ে শত্রুর দিকে ছুড়ে দেওয়ার সময় এদের মধ্যে বিক্রিয়া ঘটে। বিক্রিয়ার কারণে তরলটি তপ্ত হয়ে বেরিয়ে আসে দেহ থেকে। এ সময় তরলের তাপমাত্রা হয় প্রায় ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আত্মরক্ষার অস্ত্র হিসেবে এ তরলটি দারুণ কার্যকর। ব্যাঙের মতো উভচর প্রাণী এদের খেয়ে ফেললেও ঠিক বেরিয়ে আসার পথ তৈরি করতে পারে। শিকারী প্রাণীর পেটে গিয়ে ক্রমাগত তরল ছুড়তে থাকে। তরলটি বেশ দুর্গন্ধযুক্তও বটে। এক পর্যায়ে হয় বমি করে বের করে দেয়, নয়তো পেটের চামড়া গলে বেরিয়ে আসে। প্রায় ২০ বার ছুড়ে মারার মতো হাইড্রোক্লোরিক এসিড ও হাইড্রোকুইনোন মজুদ থাকে এদের পেটে।

অ্যান্টার্কটিকা ছাড়া পৃথিবীর সব অঞ্চলে এদের দেখা যায়। বিশেষ করে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের বনাঞ্চল বসবাসের জন্য এদের পছন্দের জায়গা। তাই বাংলাদেশেও এদের দেখা পেতে পারেন। দেখা পেলে বেশি ঘাঁটাতে যাবেন না যেন। যথেষ্ট পরিমাণে তরল ত্বক পুড়িয়ে ফেলতে পারে!

লেখক: শিক্ষার্থী, তেজগাঁও কলেজ, ঢাকা

সূত্র: সায়েন্স ফোকাস, ন্যাশনাল জিওগ্রাফি, উইকিপিডিয়া