প্রাচীনকালে অনেক জাহাজে বিড়াল রাখতেন নাবিকেরা। তাঁরা বিশ্বাস করতেন, বিড়াল অনেকটা আগে থেকেই আবহাওয়ার অবস্থা টের পায়। ফলে বিড়ালের আচরণ দেখে জানা যাবে আবহাওয়ার পুর্বাভাস। বিড়াল বেয়াড়াপনা বেশি করলে বুঝতে হবে আবহাওয়া পরিষ্কার। আবার হাঁচি দেওয়ার অর্থ, হালকা বৃষ্টির সমূহ সম্ভাবনা। দেহের পশমের উল্টো দিকে চাটার মতো বিড়ালের অদ্ভুত আচরণ ঝড় আসার সংকেত। এমনকি কেউ কেউ এটাও বিশ্বাস করতেন যে বিড়াল তার লেজের জাদুকরি শক্তির মাধ্যমে ঝড় তৈরি করতে সক্ষম।
পরবর্তীতে বিজ্ঞান এসব বিষয়কে একবারে ভিত্তিহীন প্রমাণ করতে পারেনি। না, বিজ্ঞানে কুসংস্কারের কোনো স্থান নেই। তবে যাঁরা বিড়াল পোষেন, তাঁদের অনেকেই মনে করেন, বৃষ্টির আগে বিড়াল অদ্ভুত আচরণ করে। এর কারণ হতে পারে, বৃষ্টির আগে বায়ুচাপ হ্রাস পায়। বিড়ালের অন্তঃকর্ণে এই বায়ুচাপ বোঝার মতো সংবেদনশীল পর্দা আছে। বায়ুচাপ হঠাৎ কমে গেলে তারা এমন অদ্ভুত আচরণ করতে পারে। তবে সবচেয়ে বিখ্যাত বিড়ালের মন-মেজাজের হঠাৎ পরিবর্তন। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘মুড সুইং’। কথা হলো, বিড়ালের এসব অদ্ভুত আচরণ মুড সুইংয়ের কারণে হচ্ছে, নাকি বায়ুচাপ কমার জন্য হচ্ছে, তা নিশ্চিত হবেন কীভাবে? আসলে কোনো উপায় নেই। মোট কথা, বিড়াল যে আবহাওয়ার পরিবর্তন বুঝতে পারে, এর সুনিশ্চিত কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
সবচেয়ে বড় কথা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানার আরও অনেক বিজ্ঞানসম্মত উপায় আছে। ফোনের দিকে তাকালেই অনেক নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস পাওয়া যায়। এজন্য আর বিড়ালের দিকে তাকিয়ে থাকার প্রয়োজন নেই।
লেখক: শিক্ষার্থী, তেজগাঁও কলেজ, ঢাকা
সূত্র: সায়েন্স ফোকাস