আমরা গন্ধ পাই কীভাবে

আমরা যখন কোনো কিছুর গন্ধ পাই, তখন বাতাসে ভেসে থাকা অনেক ছোট ছোট কণা নিশ্বাসের সঙ্গে আমাদের নাকে ঢুকে পড়ে। নাসা গহ্বরে এক ধরনের পিচ্ছিল পর্দা থাকে, যাকে বলে অলফ্যাক্টরি এপিথেলিয়াম। নিশ্বাসের সঙ্গে চলে আসা ছোট কণাগুলো এই পর্দায় আঘাত করে। এই অলফ্যাক্টরি এপিথেলিয়াম পর্দায় থাকে প্রচুর অলফ্যাক্টরি রিসেপ্টর স্নায়ুকোষ। কোষগুলো সূক্ষ্ম চুলের মতো সিলিয়া দিয়ে ঢাকা থাকে। এরা অলফ্যাক্টরি নার্ভে গন্ধের জন্য সংকেত পাঠায়। এভাবে মস্তিস্ক পর্যন্ত ঘ্রাণের সংকেত পৌঁছে যাওয়ার পর আমরা ঘ্রাণের অনুভূতি পাই। মানুষ প্রায় ১০ হাজার ভিন্ন ভিন্ন গন্ধ অনুভব করতে পারে। দুজন মানুষ কোনো নির্দিষ্ট কিছুর হুবহু এক রকম গন্ধ পায় না।

ঘ্রাণের ৫টি মজার তথ্য

১। মেয়েরা ভালো গন্ধ নিতে পারে

গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা পুরুষের চেয়ে বেশি ভালোভাবে গন্ধ নিতে পারে। মা হওয়ার পরপরই নারীরা নবজাতকের গায়ের গন্ধ চিনতে পারে।

২। গন্ধ খাবারের স্বাদের সঙ্গে জড়িত

জিবের টেস্টবাড শুধু মিষ্টি, টক, তিতা ও নোনা স্বাদের পার্থক্য করতে পারে। বাকি হরেক রকমের খাবারের স্বাদ আসলে নির্ধারণ করে খাবারের ঘ্রাণ।

৩। অন্ধ লোকেরা ভালোভাবে গন্ধ শুঁকতে পারে না

প্রচলিত আছে, দৃষ্টি প্রতিন্ধীরা বেশি ভালোভাবে গন্ধ পায়। এ কথার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বরং এর উল্টো কথাটাই বিজ্ঞান সমর্থন করে।

৪। বড় হওয়ার পর গন্ধ নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ে না

আট বছরেই একজন মানুষ সব গন্ধ ভালোভাবে বোঝার ক্ষমতা লাভ করে। বয়স বাড়লে এই ক্ষমতা কমতে থাকে।

৫। ঘ্রাণের ক্ষমতা ওঠানামা করে

সন্ধ্যাবেলায় ঘ্রাণশক্তি ঘুম থেকে ওঠার পর ঘ্রাণশক্তির থেকে বেশি থাকে।

যেসব কোষ ঘ্রাণ নেয়

ঘ্রাণের সঙ্গে জড়িত কোষগুলো সংবেদী কোষের গুচ্ছ নিয়ে নাসাগহ্বরের বিভিন্ন অংশ গঠিত।

মিউকোসা

নাসাগহ্বরে এপিথেলিয়াল পর্দায় মিউকোসা লাইনের রিসেপ্টর স্নায়ুকোষে গন্ধের জন্য দায়ী ক্ষুদ্র কণা আটকা পড়ে।

অলফ্যাক্টরি রিসেপ্টর স্নায়ুকোষ

সিলিয়ার মাধ্যমে এসব সংবেদী কোষ উত্তেজিত হয়ে মস্তিষ্কে তথ্য পাঠিয়ে দেয়।

অলফ্যাক্টরি সিলিয়া

প্রতিটি অলফ্যাক্টরি স্নায়ুকোষে ৮-২০টি সিলিয়া আছে। এরা বাতাসে ওড়া ক্ষুদ্র বস্তুর অনুভূতি গ্রহণ করে।