ফটোফিচার
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক নির্বাচিত বছরের সেরা ছবি
বিজ্ঞান সাময়িকী ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ‘পিকচারস অব দ্য ইয়ার’ ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতার বিজয়ী ঘোষণা করেছে। প্রকৃতি, মানুষ, স্থান, বন্য প্রাণী, বিজ্ঞান, সমুদ্র, মহাকাশ ও ভ্রমণবিষয়ক প্রায় ২১ লাখ ছবি জমা পড়ে এ প্রতিযোগিতায়। অংশগ্রহণ করেন বিশ্বের ১৬৫ জন আলোকচিত্রী। শর্ত ছিল, ছবিতে বড় ধরনের এডিট করা যাবে না। হালকা রং সংশোধনের মতো সামান্য পরিবর্তন করা যাবে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের পক্ষ থেকে বাছাইকৃত বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়েছে সাময়িকীটির ডিসেম্বর সংখ্যায়। এ প্রতিযোগিতার লক্ষ্য ছিল আলোকচিত্রীদের একই স্পটলাইটের নিচে নিয়ে আসা। সেরা ছবিগুলো থেকে বাছাইকৃত বিজ্ঞানের ছবিগুলো বিজ্ঞানচিন্তার পাঠকদের জন্য প্রকাশিত হলো।
সমুদ্রের রানি
আর্কটিক সমুদ্রের রানি হিসেবে পরিচিত জেলিফিশটির নাম লায়ন মেন জেলিফিশ। এটি রাশিয়ার হোয়াইট সি থেকে তুলেছেন সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী আলেক্সান্ডার সেমেনভের। এ বছরের সবচেয়ে আলোচিত ছবি এটিই। জেলিফিশটি বর্তমানে জীবনের শেষ পর্যায়ে আছে। এ সময়ে জেলিফিশগুলোর দেহ সঙ্কুচিত হয়ে যায়। দেখতে অনেকটা ফুলের মতো লাগে। এ সামুদ্রিক প্রাণীটিকে ভিনগ্রহের ফুল বলেও আখ্যায়িত করা হয়।
সাপের বাহারি রং
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক-এর ডিসেম্বর সংখ্যার প্রচ্ছদ করা হয়েছে এই ছবিটি দিয়ে। পালাউয়ের রক আইল্যান্ড সাউদার্ন লেগুন থেকে ছবিটি তুলেছেন কিলি ইউয়ান। ২০১৫ সালে প্রশান্ত মহাসাগরের পালাউ দ্বীপাঞ্চলের প্রায় ৩ লাখ ২২ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে সামুদ্রিক অভয়ারণ্য হিসেবে নির্বাচন করা হয়। সেখান থেকেই ছবিটি তুলেছেন কিলি ইউয়ান। সামুদ্রিক এই সাপটিকে দূর থেকে দেখতে সাদা কালো দড়ির মতো মনে হয়।
মহাশূন্যের রানি
২০২৫ সালের মধ্যে ফের চাঁদে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। চাঁদের পৃষ্ঠে মানুষ পাঠানোর আগে পৃথিবীতে নভোচারীর স্যুটের গতি ও ওজন পরীক্ষা করা হয়। নভোচারী জেনা কর্ডম্যানের এই ছবিটি যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের কোকোনিনো কাউন্টি থেকে তোলা হয়েছে। স্যুটটির ওজন ৮০ পাউন্ডেরও বেশি। ছবিটি তুলেছেন ড্যান উইন্টারস।
গুহায় প্রাণের খোঁজে
ছবিতে ক্যাভার ভ্যালেন্টিনা মারিয়ানি, কেনি ব্রড ও নাদির কোয়ার্টারকে দেখা যাচ্ছে। ইতালির ফ্রাসসি গুহার ছবি এটি। তাঁরা তিনজন এই বিষাক্ত পানিতে ডুব দিয়ে খুঁজে দেখবেন কোনো প্রাণের সন্ধান পাওয়া যায় কি না। যদিও এই গুহায় সূর্যের আলো প্রবেশ করে না। বিষাক্ত পানিতে ডুব দেওয়ার আগে ছবিটি তুলেছেন কারস্টেন পিটার।
৭ ফুটের জেব্রা হাঙর
জেব্রা হাঙরের এই ছবিটি শিকাগোতে অবস্থিত অ্যাকুরিয়াম থেকে তুলেছেন ডেভিড ডাবিলেট। প্রাণীটি বর্তমানে বিপন্ন। তাই প্রতিবছর জেব্রা হাঙরের প্রজননের জন্য অ্যাকুরিয়ামে রেখে ডিম উৎপাদন করা হয়। সেই ডিম পাঠানো হয় ইন্দোনেশিয়ায়। এদের দেখা যায় সমুদ্রের প্রায় ৬২ মিটার নিচে।
ডাইনোসরের খোঁজে
সাহারার নাইজারের টেনের এলাকা থেকে ছবিটি তুলেছেন কিথ ল্যাজনিস্কির। সেখানে বিশালাকার সেরাপড ডাইনোসরের কঙ্কাল বা জীবাশ্মের খোঁজ পেয়েছেন তিনি। প্রাথমিকভাবে জীবাশ্মটি গবেষণার জন্য পাঠানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে। গবেষণা শেষে আবার নাইজারে ফিরিয়ে আনা হবে।
বাদুড় যেভাবে ওড়ে
বাদুড় নিয়ে গবেষণা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ব্রুক কুইন ও শ্যারন সাওয়ার্ট। ওড়ার সময় বাদুড়ের স্নায়ু কীভাবে কাজ করে, তা নিয়েই তাঁরা গবেষণা করেছেন। গবেষণাগারে ছবিটি তুলেছেন নিকোল সোবেকি।
বিজ্ঞানীদের দপ্তরে
ছবিতে দেখানো বিজ্ঞানীদের এই দপ্তরের নাম জেট প্রোপালশন সেন্টার। অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায়। সেখানে বর্তমানে ইউরোপা ক্লিপার নভোযান নিয়ে কাজ চলছে। নভোযানটি আগামী বছর উৎক্ষেপণ করা হবে বৃহস্পতির সবচেয়ে বড় চাঁদ ইউরোপায়। জেট প্রোপালশন সেন্টার থেকে ছবিটি তুলেছেন ক্রিস গান।